রাখাইনে যুদ্ধাপরাধ হয়েছে, গণহত্যা নয়: মিয়ানমার কমিশন
২১ জানুয়ারি ২০২০ ২০:৪৭
রাখাইনে সেনা অভিযান তদন্তে গঠিত মিয়ানমার সরকারের স্বাধীন তদন্ত কমিশন (আইসিওই) জানিয়েছে, কিছু সেনাসদস্য সেখানে যুদ্ধাপরাধ করেছে। তবে কোনো গণহত্যা হয়নি।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়। খবর আল-জাজিরার।
আইসিওই এমন সময়ে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করল, যখন আগামী ২৩ জানুয়ারি জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) রাখাইনে গণহত্যার অভিযোগ ও রোহিঙ্গা সংকট সমাধান বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।
মিয়ানমার সরকারের কমিশন তাদের প্রকাশিত আংশিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কিছু নিরাপত্তা সদস্য সেখানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন, যুদ্ধাপরাধ ও বলপ্রয়োগের মতো কাজ করেছেন ।
রাখাইনে নির্দোষ গ্রামবাসীকে হত্যা ও তাদের ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও স্বীকার করেছে আইসিওই । তবে গণহত্যার মতো অপরাধ হয়নি বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে প্যানেল।
কমিশনের মতে, এসব অপরাধ কোনো জাতিগোষ্ঠীকে পুরোপুরি বা আংশিক ধ্বংস করার ইচ্ছা নিয়ে বা গণহত্যার আন্তর্জাতিক অপরাধ হওয়ার মতো মানসিকতা নিয়ে করা হয়েছে কি না, এ বিতর্কের যথেষ্ট প্রমাণ নেই, সিদ্ধান্ত তো আরও দূরের বিষয়।
প্যানেলের তদন্তে উঠে আসা এসব তথ্যের সঙ্গে মিয়ানমার সরকার ‘একমত’ বলে বিবৃতিতে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট উয়িন মাইন্ট।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের লক্ষ্য করে অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। ওই অভিযানে রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যা, ধর্ষণ ও তাদের সম্পদ লুণ্ঠনের অভিযোগ উঠে। অভিযানের মুখে ১১ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। সে সময় মিয়ানমারের সেনাসদস্য, পুলিশ ও বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী রোহিঙ্গাদের নিধনে সরাসরি অংশ নিয়েছে বলে জাতিসংঘের তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলে গত বছরের শেষে আইসিজেতে মামলা করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। আদালতের কাছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ৬টি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চেয়েছে দেশটি। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে, আর যেন গণহত্যার মতো ঘটনা মিয়ানমারে না ঘটে তা নিশ্চিত করা, আগের গণহত্যার আলামত নষ্ট না করা, রোহিঙ্গা ও মিয়ানমার সরকার উভয় পক্ষকে শান্ত থাকা এবং উত্তেজনে প্রশমনে সাহায্য করা। এছাড়া, মিয়ানমার জাতিসংঘকে তদন্তের ব্যাপারে সাহায্য করবে এই নিশ্চয়তাও চায় গাম্বিয়া। দেশটির এসব প্রস্তাবনায় সমর্থন দিয়েছে মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসি।