দারুস সালাম থানার ওসির প্রত্যাহার চেয়ে ইসিতে তাবিথের চিঠি
২১ জানুয়ারি ২০২০ ২৩:২৩
ঢাকা: রাজধানীর গাবতলী এলাকায় নির্বাচনি প্রচারণায় হামলার সময় নিস্ক্রীয় থাকার অভিযোগে রাজধানীর দারুস সালার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অপসারণ চেয়েছেন বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা উত্তর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেমের কাছে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দেন তার প্রতিনিধি মো. জুলহাস উদ্দিন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, হামলার সময় পুলিশ নিষ্ক্রীয় থাকায় দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) সাময়িক বরখাস্ত ও প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেন, ‘আজ ২১ জানুয়ারি ২০২০ মঙ্গলবার বেলা ১০টা হতে আমি সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা-২০১৬-এর বিধান পালন করে নির্বাচনি প্রচরিণী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৯ নং সাধারণ ওয়ার্ড এলাকা তথা কোটবাড়ি, ব্লজারপাড়া, হরিরামপুর, গোলারটেক, জহুরাবাদ ইত্যাদি এলাকায় পথসভা ও ঘরোয়া সভা অনুষ্ঠান ও গণসংযোগে যাই। প্রচারণাকালে আমার সাথে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকও ছিলেন। পথসভা, ঘরোয়া সভা অনুষ্ঠান ও গণসংযোগ পূর্ব নির্ধারিত ছিল, যা পূর্ব দিন আইনানুগভাবে সংশ্লিষ্ট দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসারকে লিখিতভাবে অবহিত করেছি।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘আমার পূর্বনির্ধারিত পথসভা, ঘরোয়া সভা ও গণসংযোগ অনুষ্ঠানে আমার নির্বাচনি প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আতিকুল ইসলামের কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মী-সমর্থক এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ঠেলাগাড়ি প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী মজিব সারোয়ার মাসুম উপস্থিত থেকে স্বয়ং অতর্কিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ওপর এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উপর ‘জঘন্যভাবে’ আক্রমণ করে। এই ঘটনায় আমি ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও এতে আমিসহ শারীরিক নির্যাতনে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আমার নেতৃবৃন্দ ও কর্মী-সমর্থকগণ আহত হয়।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘এ নির্যাতন ও আক্রমণের সময় পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিষ্ক্রিয় থাকে। পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা যদি আইনানুযায়ী আরও সক্রিয় থাকতো তাহলে এধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মী-সমর্থকদের শারীরিক নির্যাতন, নিপীড়ন ও জঘন্য আক্রমনসহ এ ধরনের কার্যক্রম সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ – এর-৭ বিধির (গ) উপ-বিধির বিধান চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করি। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এ সংক্রান্ত ফটোক্লিপিং এতদসঙ্গে সংযুক্ত করা হলো।’
চিঠিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘দারুস সালাম থানাধীন এলাকায় বিগত ১২ জানুয়ারি ২০২০ বেলা আনুমানিক ১১টায় একই কায়দায় আমার উপর ও আমার কর্মী সমর্থকদের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লোকজন অতর্কিত আক্রমণ করে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের পক্ষের অনেক লোকজন আহত হয়। আমাদের লোকজনকে যে সকল উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তিবর্গ আহত করেছে সেসব উচ্ছৃল ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না হয়ে বরং আমার আহত কর্মী সমর্থকদের নামে উল্টো মামলা দিয়ে পুলিশ অহেতুক হয়রানি করছে।’
চিটিতে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়েও আমি গত ১২ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের বরাবরে অভিযােগ জানিয়ে প্রার্থী হিসেবে আমার নিরাপত্তা প্রদানের অনুরোধ করি। এ বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় নাই বিধায় পুনরায় এ ধরনের কার্যক্রমের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।’ ওসির প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এই এলাকায় এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জন্য সংশ্লিষ্ট দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত ও প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।