রেলের টেন্ডার নিয়ে জোড়া খুন, প্রধান আসামি গ্রেফতার
২২ জানুয়ারি ২০২০ ১৪:১৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: রেলওয়ের টেন্ডার নিয়ে বিরোধের জেরে চট্টগ্রামের সিআরবিতে জোড়া খুনের মামলার প্রধান আসামি অজিত বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক নেতা হেলাল আকবর চৌধুরীর বাবরের অনুসারী হিসেবে অজিত পরিচিত।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) ভোরে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার আমুচিয়া ইউনিয়নের ধোরলা গ্রাম থেকে অজিতকে গ্রেফতার করা হয় বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মিজানুর রহমান।
তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘সিআরবির ডবল মার্ডার মামলায় অজিত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে। এই মামলার চার্জশিটও হয়েছে। নিম্ন আদালতে নিয়মিত হাজিরার শর্তে অজিত উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন। কিন্তু নিম্ন আদালতে সে নিয়মিত হাজিরা না দেওয়ায় তার জামিন বাতিল হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও বিভিন্ন অভিযোগ আছে।’
রেলওয়ের কোটি টাকার দরপত্রের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ২০১৩ সালের ২৪ জুন যুবলীগের সেসময়ের কেন্দ্রীয় নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর এবং ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল আলম লিমনের অনুসারী নেতা-কর্মীদের মধ্যে চট্টগ্রামের সিআরবি (রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দফতর) এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান যুবলীগ কর্মী সাজু পালিত (২৮) এবং স্থানীয় বস্তির শিশু মো. আরমান (৮)।
ঘটনার পর নগরীর কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিবুর রহমান বাদি হয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের ৮৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার এজাহারে অজিত বিশ্বাস ছিলেন ৭৮ নম্বর আসামি। নিহত সাজু পালিতের মা পরে আরেকটি মামলা করেন আদালতে, যাতে অজিত বিশ্বাসকে প্রধান আসামি করা হয়েছিল। আদালত দুটি মামলা একসঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ওই মামলায় ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর ৬২ জনকে আসামি এবং ৩৭ জনকে সাক্ষী করে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিল নগর গোয়েন্দা পুলিশ। কিন্তু আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ না করে পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পিবিআই অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। এতে ৬৪ জনকে আসামি ও ১৭ জনকে সাক্ষী করা হয়। এই প্রতিবেদনে অজিত বিশ্বাসকে এক নম্বর এবং সাইফুল আলম লিমনকে দুই নম্বর আসামি করা হয়।
পিবিআইয়ের অভিযোগপত্রে উল্লেখ আছে, ‘সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া গেছে, সংঘর্ষ শুরু হওয়ার আগে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে অজিত বিশ্বাস পূর্বশত্রুতার কারণে সাজু পালিতকে গুলি করেন। এ সময় লিমনের অনুসারীরা বাবরের অনুসারীদের দিকে এগিয়ে এলে অজিত আবার গুলি ছোড়েন। সেই গুলিতে শিশু আরমান নিহত হয়।’
সিআরবির জোড়া খুনের পর অজিত বিশ্বাস চট্টগ্রাম নগরী থেকে বোয়ালখালীতে গিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হন। আমুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃত্বেও ছিলেন অজিত।