Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খেলার মাঠে দাঁড়ানো নিয়ে চবিতে হামলা-পাল্টা হামলা


২২ জানুয়ারি ২০২০ ২০:৪২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) খেলার মাঠে দৌড়ানোর ট্র্যাকে দাঁড়ানো নিয়ে বিরোধে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে পিটিয়ে আহত করেছে প্রতিপক্ষের কর্মীরা। এর জেরে পরবর্তীতে ছাত্রাবাসে হামলা-পাল্টা হামলা, ফটক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ৬ ছাত্র আহত হয়েছেন।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে বার্ষিক কেন্দ্রীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিকেল ৪টার দিকে ৪০০ মিটার দৌড়ের ট্র্যাকে দাঁড়ানো নিয়ে কথা কাটাকাটির পর আজাদ নামে এক ছাত্রকে মারধর করা হয়। আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এবং শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) গ্রুপের কর্মী।

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা শুরু হয়। মারধরের জন্য প্রতিপক্ষ শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের দায়ী করে সিএফসি। এক পর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সিএফসি আমানত হলে ও বিজয় গ্রুপ সোহরাওয়ার্দী হলে অবস্থান নেয়। সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলে বিজয় গ্রুপের কর্মীদের ওপর হামলা করে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ক্যাম্পাসে যায়। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

হামলা পাল্টা হামলায় আহতরা হলেন, বিজয় গ্রুপের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আবু বক্কর সিদ্দিক, একই শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের অপূর্ব, সিএফসি গ্রুপের ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আজাদ, সিক্সটি নাইন গ্রুপের নাট্যকলা বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের মাহফুজুল হুদা লোটাস, একই শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ইব্রাহিম খলিল এবং ইতিহাস বিভাগের জাহিদ শাকিল।

বিজ্ঞাপন

সিএফসি গ্রুপ চবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের নিয়ন্ত্রণে আছে। সিএফসি এবং বিজয় গ্রুপ উভয়ই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

এই বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল সারাবাংলাকে বলেন, ‘বগিভিত্তিক সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। যদি প্রশাসন ব্যবস্থা নিত, তাহলে এই ধরনের ঘটনা ঘটত না। বগিভিত্তিক সংগঠনগুলো বিশ্ববিদ্যালয়কে অশান্ত করার জন্য বারবার ঝামেলা তৈরি করছে কি না সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।’

বিজয় গ্রুপের নেতা জাহাঙ্গীর জীবন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সভাপতি রুবেলের নেতৃত্বে এই মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সভাপতি হলেও তার মধ্যে সাংগঠনিক অপরিপক্বতা আছে। এজন্য তার অনুসারীরাও তার ওপর সন্তুষ্ট নয়। এই ঘটনার দায় তাকে নিতে হবে।’

এদিকে এই উত্তেজনার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশন সংলগ্ন সিপি ফাইভ দোকানের সামনে শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক আরেকটি গ্রুপের কয়েকজন নেতাকর্মীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, তাদের কয়েকজনের ওপর একদল মুখোশধারী অতর্কিত হামলা করেছে।

এই ঘটনা ওই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে ফের উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে সিক্সটি নাইনের কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক অবরোধ করে আন্দোলন করে। পরে প্রোক্টর বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

সিক্সটি নাইন গ্রুপ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তিনি বলেন, ‘কি কারণে কারা হামলা করল সেটা আমরা জানি না। আমরা প্রশাসনের কাছে কঠোর পদক্ষেপ চাই। প্রশাসন কঠোর না হলে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়বে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ‘সামান্য বিষয় নিয়ে মতবিরোধ থেকে উত্তেজনা হয়েছিল। সেটা সমাধান হয়েছে। আর মুখোশধারীদের হামলার বিষয়ে- কে বা কারা এটা করেছে এখনও জানতে পারিনি। তবে আমরা দ্রুত শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছি।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চবি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর