ভোটের আগে সরছে না লেমিনেটেড পোস্টার!
২৩ জানুয়ারি ২০২০ ০০:৪৭
ঢাকা: পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর লেমিনেটেড পোস্টার ব্যবহার বন্ধের ব্যাপারে হাইকোর্ট নির্দেশ দিলেও এরই মধ্যে যেসব পোস্টার ব্যবহার করা হয়েছে রাজধানীজুড়ে, সেগুলো ভোটের আগে সরছে না।
প্রচারণার জন্য ব্যবহার করা লেমিনেটেড পোস্টার নির্বাচনের পরে সরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ঢাকা উত্তরে নৌকার মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ও ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। আর দক্ষিণে বিএনপির প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন ও আওয়ামী লীগের ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস জানিয়েছেন, তারা এখন প্রচারণায় ব্যস্ত। আদালতের নির্দেশের কপি হাতে পেলে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন। অবশ্য আতিকুল ও তাবিথ দু’জনেই জানিয়েছেন, নির্বাচনের পর এসব পোস্টার রিসাইক্লিংয়ের জন্যও প্রস্তুত তারা।
আরও পড়ুন- নির্বাচনে পলিথিন মোড়ানো পোস্টার প্রদর্শনে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা
নির্বাচনি প্রচারণার জন্য লেমিনেটেড পোস্টার ব্যবহার বন্ধে বুধবার (২২ জানুয়ারি) হাইকোর্ট নির্দেশ জারি করেন। এরপর প্রধান চার মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে কথা হয় সারাবাংলার। এসময় তারা চারজনই স্বীকার করে নেন, পলিথিন মোড়ানো পোস্টার বা লেমিনেটেড পোস্টার ব্যবহার পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। তারপরও বৃষ্টি, কুয়াশা, ধুলা-বালি ও শৈত্যপ্রবাহ থেকে পোস্টার রক্ষায় লেমিনেটিং করা হয়েছে।
তবে বিষয়টি সাধারণ মানুষের মধ্যে একধরনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে এবং হাইকোর্টও এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করেছেন বলে তারা নতুন করে আর লেমিনেটেড পোস্টার লাগাবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে যেসব পোস্টার এই মধ্যে ঝুলছে রাজধানীতে, সেগুলো নির্বাচনের আগে সরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস কোনো প্রার্থীই দেননি।
বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস সারাবাংলাকে বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশনার বিষয়টি আমরা গণমাধ্যমের বরাতে জানতে পেরেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা পরিষ্কার না, লেমিনেটেড পোস্টারের সরানোর ব্যাপারে হাইকোর্ট কী বলেছেন বা নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেবে কি না। তবে নির্দেশনার কপি হাতে পেলে আমরা অবশ্যই পদক্ষেপ নেব।’
বুধবার রাতে দক্ষিণে বিএনপির প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনার বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। আমি ঠিক জানি না, দক্ষিণে ধানের শীষের কী পরিমাণ পোস্টার লেমিনেটিং করে টাঙানো হয়েছে। যেহেতু দূষণমুক্ত, সুন্দর, মানবিক ঢাকা গড়ার স্বপ্ন নিয়ে আমরা এগোচ্ছি, তাই পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর লেমিনেটেড পোস্টার আর টাঙানো হবে না। আর যেগুলো টাঙানো হয়েছে, ভোটের পর সেগুলো নিজ দায়িত্বে অপসারণ করব।’
এদিকে, ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘নির্বাচন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সব ধরনের পোস্টার সরিয়ে ফেলা হবে। এরই মধ্যে আমার কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা প্লাস্টিকে মোড়ানো এইসব পোস্টার রিসাইক্লিং করে। এসব পোস্টার নেওয়ার জন্য তারা মুখিয়ে আছে।’
অবশ্য আদালতের নির্দেশনার আগেই আতিকুল ইসলাম এক গণসংযোগে বলেছিলেন, ‘পোস্টারে শহরে সৌন্দর্য নষ্ট হয়। আমি ইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তারা এমন আইন করুক যেন পোস্টার ব্যবহার করা না যায়। এরপর থেকে যেন পোস্টারের পরিবর্তে সবাই ডিজিটাল মাধ্যমে নির্বাচনি প্রচারণা চালায়।‘
আর ঢাকা উত্তরে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার পোস্টার লেমিনেটেড হওয়ার কথা না। আমরা জানি, শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা পৃথিবীর সমস্যা হচ্ছে প্লাস্টিক বর্জ্য, প্লাস্টিক দূষণ। আমি সচেতনভাবে আমার কর্মীদের বলেছি, আমরা যেন পলিথিন ব্যবহার না করি।’
তাবিথ আরও বলেন, ‘নির্বাচনের রায় যাই হোক, আমাদের সব প্রার্থীর লেমিনেটেড পোস্টার আমি নিজে সরিয়ে রিসাইক্লিংয়ের ব্যবস্থা করব। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনেরও ভূমিকা থাকা উচিত, যেন লেমিনেটেড পোস্টার ব্যবহার করার সুযোগ না থাকে।’
আতিকুল ইসলাম ইশরাক হোসেন তাবিথ আউয়াল লেমিনেটেড পোস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস সিটি নির্বাচন