করোনাভাইরাসে ১৭ মৃত্যু, ‘বিচ্ছিন্ন’ কোটি মানুষের শহর উহান
২৩ জানুয়ারি ২০২০ ১৩:৫৯
করোনাভাইরাসের ঝুঁকি বেড়ে চলায় চীনের সপ্তম বৃহৎ শহর উহানে সকল গণপরিবহন সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ শহরটিতে বসবাস করে। এখান থেকেই ভাইরাস ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, হংকংসহ বিভিন্ন দেশে।
এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ৫৭১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের প্রায় সবাই চীনা নাগরিক। মৃত ১৭ জনের সবাই হুবাইর উহানের বাসিন্দা। নতুন এই করোনাভাইরাসকে চিহ্নিত করা হয়েছে ২০১৯-এনসিওভি নামে, যেটির উপস্থিতি আগে কখনো মানবদেহে পাওয়া যায়নি। খবর বিবিসির।
২০০০ সালের শুরুতে যে দ্য সার্স ( সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপারেটরি সিনড্রোম) ভাইরাসে সারাবিশ্বে ৮০০ এর বেশি মানুষ মারা যায় সেটিও এক ধরনের করোনাভাইরাস ছিল বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
এদিকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে জেনেভায় বৈঠক করেছে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও)। ভাইরাসের কারণে এখনই বিশ্বে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। সারাবিশ্বে তখনই স্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় যখন কোনো রোগ মহামারি হিসেবে দেখা দেয়। এর আগে সোয়াইন ফ্লু, জিকা ভাইরাস ও ইবোলা ছড়িয়ে পড়ায় এ ধরনের সতর্কতা জারি করেছিল ডব্লিউএইচও।
শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া নতুন চান্দ্র বর্ষের ছুটিতে উহানের বাসিন্দারা বিভিন্ন দেশে ঘুরতে যেতে পারেন ও ভাইরাস ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ জন্য বৃহস্পতিবার থেকে উহানের সব ফ্লাইট ও রেলসেবা বন্ধ থাকবে। এরপর বন্ধ করে দেওয়া হবে বাস, সাবওয়ে ও ফেরি চলাচল।
উহানের নাগরিকদের সতর্ক করে বলা হয়েছে তারা যেন জনসমাবেশ এড়িয়ে চলেন। এছাড়া, লাইব্রেরি, জাদুঘর, থিয়েটারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রদর্শনী ও পরিবেশনা বন্ধ রাখতে।
গত ৩১ ডিসেম্বর করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত করা হয়। এর পরপরই সতর্কতা অবলম্বন শুরু করে চীনে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও নেওয়া হয়েছে সুরক্ষা ব্যবস্থা।
হাঁচি, কাশির মাধ্যমে ছড়ায় এই করোনাভাইরাস। ভাইরাসের কারণে রোগীর নাক, সাইনাস বা গলার উপরিভাগে সংক্রমণ ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, বাজারে জবাই করার জন্য রাখা প্রাণীদের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। যদিও কোন প্রাণী এই ভাইরাসের জন্য দায়ী তা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।
বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, ভাইরাসটি হয়ত ইতোমধ্যে মিউটেট করছে অর্থাৎ নিজে থেকেই জিনগত গঠন পরিবর্তন করছে ও নতুন রূপ নিচ্ছে। তাই এটি আরও বেশি ছড়িয়ে পড়তে পারে।