নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশনকে ‘রশিদমুক্ত’ করা হবে: আতিকুল
২৫ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:২৬
ঢাকা: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (ডিএনসিসি) আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম বলেছেন, সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতিমুক্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে অটোমেশন পদ্ধতির বিকল্প নেই। নির্বাচিত হলে নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশনকে ‘রশিদমুক্ত’ করা হবে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশান ক্লাবের লামডা হলে এফবিসিসিআই ও সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে আতিকুল ইসলামকে সমর্থন দেন শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সংগঠনের বিভিন্ন নেতারা।
আতিকুল ইসলাম বক্তৃতায় ৯ মাস দায়িত্ব পালনকালে নিজের কিছু অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। এ সময় তিনি রশিদ নামে এক ব্যক্তির উদাহরণ দেন।
সিটি করপোরেশনে এখনো সনাতনি পদ্ধতিতে কাজ করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এতে অনেক সময় নষ্ট হয়। আমি বলেছি এটা হতে পারে না, অটোমেশনের মাধ্যমে আমাদের হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে হবে। সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেটিরও সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম যা এখন সম্পন্ন হওয়ার পথে। আমি নির্বাচিত হলে ছয় মাস পরে সবাই ঘরে বসেই হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে পারবে। এতে করে সবার সময় সাশ্রয় হবে।
এ সময় দায়িত্ব থাকাকালীন একটি ঘটনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একদিন এক ব্যক্তি আমার কাছে এসে জানালেন তার নাম রশিদ। সে প্রথমে নিজেকে অনেক বড় এক রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবেই পরিচয় দেয়। সে আমাকে এসে বললো ‘স্যার অনলাইনে ট্যাক্স নেওয়া যাবে না। আমি বললাম, কেনো অনলাইনে ট্যাক্স নেওয়া যাবে না? সে তখন বলে, ‘স্যার রশিদ দিয়েই বছরের পর বছর ট্যাক্স দেওয়া হয়ে আসছে।’
‘আমার তখন সন্দেহ হলো তার কথায়। যখন তার শক্তির উৎস খুজে বের করতে গেলাম তখন জানতে পারি সে একটা রাজনৈতিক দলের ফান্ডে টাকা দেয়। আমি আরও জানলাম সে সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মকর্তাও নন, একজন কেরানি। তখন সন্দেহ আরও বেড়ে গেলো।’ যোগ করেন তিনি।
কথা চালিয়ে গেলেন মেয়রপ্রার্থী, ‘খুঁজতে খুঁজতে দেখলাম তার ঢাকা শহরে ৮টা বাড়ি আছে। সে কিভাবে ৮ টা বাড়ি করেছে তা যখন অনুসন্ধান করলাম তখন দেখলাম, সারাদিনে সে যদি ২০ টি ট্যাক্সের টাকা নেয় তবে সেখান থেকে সরকারি ফান্ডে জমা দেয় ১৫ টার টাকা। আর বাকি ৫ টির টাকা তার নিজের পকেটেই চলে যায়।’
আতিকুল যোগ করেন, ‘দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ার পরে তাকে যখন আমি সাসপেন্ড করি তখন তার কিছু সময় পর থেকেই আমার কাছে অনেক মাসলম্যানের ফোন আসে। আমাকে বলে আমিই নাকি থাকতে পারবো না। আমি তখন বলেছিলাম যত যাই হোক রশিদ আর সিটি করপোরেশনে ঢুকতে পারবে না। আমি তাই করেছিলাম।’
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনে আর যাই হোক রশিদদের রশিদগিরি চলতে দেওয়া হবে না। নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশনকে ‘রশিদমুক্ত’ করা হবে। অসম্ভব বলে কিছুই নেই এই সিটি করপোরেশনে। এ রকম রশিদও সিটি করপোরেশনে অনেক আছে।
তাই দুর্নীতিরোধ করতে গেলে অটোমেশনের কোনো বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এই মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এ. কে. আজাদ, সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, আবদুল মাতলুব আহমাদ, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মাহমুদ, বারিধারা সোসাইটির সভাপতি ও বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী, এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মুনতাকিম আশ্রাফ, সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, দিলীপ কুমার আগারওয়ালা, রেজাউল করিম রেজনু, বিপিজিএমইএর সভাপতি জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, বারভিডার সভাপতি হাবিব উল্লাহ ডন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএ মান্নান কচি, গুলশান ক্লাবের সভাপতি সাইফুর রহমান, গুলশান সোসাইটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন ও দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, এফবিসিসিআইর সাবেক সহসভাপতি দেওয়ান সুলতান, এফবিসিসিআইর পরিচালক নাজ ফারহানা, বিসিআইর সহসভাপতি প্রীতি চক্রবর্তীসহ অন্যান্যরা।