মৃত্যুর কারণ জানতে সাতদিন পর দুই শিশুর মরদেহ উত্তোলন
২৫ জানুয়ারি ২০২০ ১০:১৭
গাইবান্ধা: মৃত্যুর কারণ জানতে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে দাফনের সাতদিন পর মিম খাতুন ও জিহাদ সরকার নামে দুই শিশুর মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারী) বিকেলে সাদুল্যাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের আলদাদপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে তাদের মরদেহ উত্তোলন করে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম ফয়েজ ও সাদুল্যাপুর থানার ওসি মাসুদ রানা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে ওই মরদেহ তোলা হয়।
চার বছরের শিশু মিম আলদাদপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক নুরুন্নবী মিয়ার মেয়ে ও সাত বছরের জিহাদ একই এলাকার শিপন সরকারের ছেলে। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই-বোন।
এর আগে, গত ১৭ জানুয়ারী বিকেলে বাড়ির সামনে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশু মিম ও জিহাদ। পরে খোঁজাখুজির পর বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্বজনরা। পুকুরের পানিতে ডুবে মৃত্যুর পরদিন ১৮ জানুয়ারী দুপুরে তাদের মরদেহ স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে, দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় নানা রহস্য ও ব্যাপক জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয় গ্রামজুড়েই। এরপর দাফনের তিনদিন পর গত ২১ জানুয়ারী রাতে দুই শিশুকে হত্যার অভিযোগ এনে শিশু মিম খাতুনের বাবা নুরুন্নবী মিয়া বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে সাদুল্যাপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, ‘শিশু মিমের বাবার মামলার পর আদালতের নির্দেশে লাশ কবর থেকে তোলা হয়। সাতদিন আগে দাফন করা লাশ কিছুটা পচন ধরেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাইবান্ধা আধুনিক মর্গে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় ময়নাতদন্ত সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে দুই শিশুর মৃত্যুর রহস্য উৎঘাটন সম্ভব হবে। নানা ভাবে তথ্য উদ্ধারসহ ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে’।
মামলার বাদি শিশু মিমের বাবা নুরুন্নবী মিয়ার অভিযোগ, পানিতে ডুবে মিম ও জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় তাদের সন্দেহ হয়। তাছাড়া মিমের গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিলো। তাদের ধারণা, হত্যার পর লাশ ফেলে রাখে দুর্বৃত্তরা। তাছাড়া ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী তাদের চাপ দেয় বলেও অভিযোগ নুরুন্নবীর। তাই রহস্য উন্মোচন এবং প্রকৃত হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি করেন তিনি’।
এ বিষয়ে সাদুল্যাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদি বলেন, ‘তার ইটভাটার অদূরেই দরিদ্র পরিবারের দুই শিশু সন্তানের একসঙ্গে মৃত্যুর ঘটনাটি অত্যন্ত কষ্টদায়ক। তবে তাদের মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উৎঘাটন দরকার। শিশু দুটি হত্যার শিকার হলে সেই হত্যাকারীদের চিহ্নিত করাসহ সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন তিনি’।