অধিকার আদায়ের পথ থেকে সরে দাঁড়াব না: ইশরাক
২৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৫:০৩
ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, ‘সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কথা বলার কারণে গুলি খেতে হলে শাপলা চত্বরে বুক পেতে দেব। তবুও মানুষের অধিকার আদায়ের পথ থেকে সরে দাঁড়াব না।’
রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে নির্বাচনি প্রচারণার সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। এসময় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খানও বক্তব্য রাখেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, ‘শুধু ঢাকা নয়, পুরো দেশে আজ ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি নির্ভয়ে দলবেঁধে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। আমরা গণতন্ত্র ও নিজেদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনে রয়েছি। এ আন্দলনের মাধ্যমে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অবশ্যই মুক্ত করবো। প্রয়োজনে রক্ত দেব, জীবন দেব, তবুও খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে ছাড়ব।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৩ বছর ক্ষমতাসীনরা দেশের অর্থনৈতিক খাতকে ধ্বংস করেছে। শেয়ার মার্কেট থেকে সাধারণ মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছে। মানুষ সর্বহারা হয়ে দিনের পর দিন আন্দোলন করছে এবং আত্মহত্যার মত ঘটনাও ঘটেছে।’
ইশরাক বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ভোল্ট থেকে সোনা চুরি করা হয়েছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। একটা দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সোনা চুরি হয়ে যায়, কত বড় দুর্নীতিবাজ, কত বড় ডাকাত হলে এটা সম্ভব! যারা সরকারি উচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন, তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, জনগণের আমানত লুট করা হয়েছে। এভাবে জনগণের কষ্টে অর্জিত টাকা লুট হয়ে যাচ্ছে, তারপরও আমরা নিশ্চুপ হয়ে বসে আছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার জাতি। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই দেশের স্বাধীনতা অর্জন করা হয়েছিল। আমরা কোনো তাবেদারি মানব না, কারও জমিদারি মানব না। এই দেশটা কারও পারিবারিক সম্পত্তি না। রক্ত দিয়ে যে দেশ স্বাধীন করেছি, প্রয়োজনে আবার রক্ত দিয়ে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করব।
জনগণ জেগে উঠেছে দাবি করে ইশরাক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল জনগণ হবে রাষ্ট্রের মালিক, জনগণ হবে দেশের মালিক, জনগণ হবে ক্ষমতার মালিক। জনগণ নির্ধারণ করবে কারা দেশ পরিচালনা করবে, জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রাথমিক বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ইশরাক হোসেন তার বক্তব্যে তার যোগ্যতা নিজেই প্রমাণ করেছেন বলে আমি বিশ্বাস করি। ইশরাকের বাবা সাদেক হোসেন খোকা এবং আমি ঢাকা শহরের সাবেক মেয়র ছিলাম। আমি বিশ্বাস করি ইশরাক হোসেন তার বাবা এবং চাচার অভিজ্ঞতা, সাহস কাজে লাগিয়ে আপনাদের পাশে থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘ইশরাক যেই বক্তব্য দিল আমি বিশ্বাস করি ঢাকা মহানগরীতে এমন কোনো প্রার্থী দাঁড়ায়নি যে তার সামনে এসে কথা বলতে পারবে। এটা আমার গর্ব না, এটা আমার অহংকার না, এটা হচ্ছে বাস্তবতা।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দেশের জনগণ পরিবর্তন চায়। তারা এই অত্যাচারী, গণতন্ত্র হত্যাকারী, নিপীড়নকারী, ভোট চোর এবং ব্যাংক লুট-শেয়ারবাজার লুটেরা সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।‘
বিএনপি নেতা-কর্মীসহ সাধারণ জনগণ ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাই ভোটকেন্দ্র পাহারা দেবেন। যাতে করে কোনো ভোট চোর, ভোট ডাকাত জনগণের অধিকার ছিনিয়ে নিতে না পারে।’
প্রচারণা অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুবদল নেতা এস এম জিলানী, নুরুল ইসলাম নয়ন, মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান ও শরিফ হোসেনসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।