চিত্র প্রদর্শনীতে কাপ্তাই লেক বাঁচানোর তাগিদ
২৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৮:০৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বর্জ্য দূষণের শিকার কাপ্তাই লেকের পানি। প্লাস্টিক, পলিথিন, বোতল, মল-মূত্র, ময়লা আবর্জনা কাপ্তাই পানিতে প্রতিনিয়ত ফেলা হচ্ছে। ফলে পানি পান করা ও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) কাপ্তাই লেক দুষণরোধে ‘জুম সায়েন্স ক্লাব’ জনসচেতনতামূলক এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় বুদ্ধিজীবি শত্বরে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনী প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড.শিরিন আখতার। এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে কাপ্তাই লেকের পানি দূষণরোধের পাশাপাশি ফুটে উঠেছে পাহাড়ের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও জীবনধারা।
জুম সায়েন্স ক্লাব সূত্রে জানা যায়, আজকের আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে রাঙামাটি থেকে ছবি আনা হয়েছে। এসব ছবিগুলো বেশিরভাগ ল্যান্ডস্কেপে ধারণ করা। ছবিগুলোতে কাপ্তাই লেকের পানি দূষণ ও জুম কালচার ফুটে তোলা হয়েছে। গ্যালারিজুড়ে নানা রঙের আলোকচিত্র। যেখানে পাহাড়িদের পাহাড়ের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও জীবনধারা বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকেরা কাপ্তাইলেক ঘুরতে যান। সেক্ষেত্রে পর্যটকেরা প্লাস্টিক, পলিথিন, বোতল পানিতে ফেলেন। ফলে সেগুলো পানির সঙ্গে মিশে যায়।
তারা আরও জানান, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পাহাড়িরা বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করছে। যেখানে বিদ্যুৎ, টিউব-ওয়েল নেই। তারা একমাত্র কাপ্তাই লেকের পানির উপর নির্ভরশীল। যার ফলে তাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতিকর হচ্ছে। তাই আমাদের পর্যটকদের সচেতন করতে আজকের এই চিত্র প্রদর্শনী। এছাড়াও কাপ্তাই বাঁধের ফলে ৫৪ হাজার একর কৃষি জমি হ্রদের জলে ডুবে যায়। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ১ লাখ লোক। যাদের মধ্যে অধিকাংশ ছিল চাকমা। এসব উদ্বাস্তু পাহাড়ীদের কথাও এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে ফুটে তোলা হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য শিরিণ আখতার বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বিষয় হলো পরিবেশ বিপর্যয়। মানবসৃষ্ট দূষণের ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য আজ হুমকির সম্মুখীন। এই পরিবেশ বিপর্যয় থেকে উত্তরণের জন্য জনসচেতনতার বিকল্প নেই। কাপ্তাই লেক বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো হয়। এ লেকের মাছ বাংলাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য সম্পদের উৎস। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এই লেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’ তাই পরিবেশ দূষণ থেকে এ লেক রক্ষা করা আমাদের সকলের অন্যতম দায়িত্ব বলেও জানান তিনি।