বিএনপির হামলার ঘটনা পরিকল্পিত, নির্বাচন বানচালের ইঙ্গিত: আমু
২৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৯:২৭
ঢাকা: আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাপরিষদ সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেছেন, বিএনপির প্রচারণার কোনো শিডিউল প্রোগ্রাম ছিল না। এধরনের প্রোগ্রামের কথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আগে জানানো হয়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বক্তব্যে স্পষ্ট যে, এই হামলার ঘটনা তাদের সুপরিকল্পিত। এটি নির্বাচন বানচালের একটি ইঙ্গিত।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। এর আগে দুপুরে হামলার ঘটনার পর জরুরি বৈঠকে বসেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতারা।
রাজধানীর টিকাটুলি এলাকার অভয়দাস লেনে নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনি ক্যাম্পে হামলার ঘটনা তুলে ধরে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘তারা (বিএনপি) গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসছে, এই ধারা সুষ্ঠভাবে চলবে- এটাই আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল। কিন্তু নির্বাচনি প্রচারণায় তারা বলা শুরু করল, নির্বাচন সুষ্ঠ হবে না, অবাধ হবে না, নিরপেক্ষ হবে না, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হতে পারে; নিজেরা চ্যালেঞ্জ দেওয়ার ঘোষণা দিল, তারা শেষ পর্যন্ত দেখে নেবে। এই সমস্ত কথাবার্তার মধ্য দিয়েই আমরা আঁচ করতে পারছিলাম, তারা আসলে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে না। নির্বাচন বানচাল করবে।’
আমু আরও বলেন, ‘বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লক্ষ্য করলাম, সারাদেশে তাদের বিএনপি-জামায়াতের ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সন্ত্রাসবাহিনীকে ঐক্যবদ্ধভাবে সমবেত করা হচ্ছে। তখন আমাদের সন্দেহ আরও প্রকট আকার ধারণ করেছিল। আজ তারই একটি বহিঃপ্রকাশ আমরা লক্ষ্য করলাম।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলেছে, ‘ওখানে বিএনপির প্রচারণার কোনো শিডিউল প্রোগ্রাম ছিল না। এধরনের কোনো প্রোগ্রামের শিডিউল তাদের আগে জানানো হয়নি। অর্থাৎ ওখানে তাদের নির্বাচনি প্রচারে যাওয়ার পরিপক্ষিতে ঘটনা ঘটেছে, এটা যে সঠিক নয়। কারণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এটা তারা হঠাৎ করেছে। এটা তাদের একটা সুপরিকল্পিত ঘটনা। এই ঘটনা নির্বাচন বানচালের একটি ইঙ্গিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও দুয়েকদিন আগে দুয়েক জায়গায় মারপিট হয়েছে মাত্র। কিন্তু আজকে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয়েছে। এবং আমাদের প্রায় ৫০জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। অনেকেই অল্প আহত। তাদের কয়েকজন আপনাদের সামনে উপস্থিত আছে এবং কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আমরা মনে করি, সারাদেশের মানুষের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা সেটা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। গণতান্ত্রিক পন্থায় তারা সক্রিয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নেবেন। নির্বাচন বানচালের জন্য নয়, নির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে অংশ নেবে এটাই আমাদের আশা।’
হামলার ঘটনায় যারা সতিক্যারের দোষী তাদের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে বিধি-বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান আমু। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতি যাতে স্বাভাবিক থাকে, মানুষ যাতে সঠিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের আরও সতর্ক ও সজাগ থেকে কার্যকরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
হামলার ঘটনার দলীয়ভাবে কোনো মামলা করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে আমু বলেন, ‘আমাদের যারা আহত হয়েছেন, তাদের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে মামলা থানায় করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রতিবাদ জানানো হবে। তারপর কমিশন যেটা ভালো মনে করে সেটা করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, যুবলীগের সাবেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাত, সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহিসহ প্রমুখ।