Tuesday 01 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফের বেড়েছে চালের দাম, এবার মিল মালিকরা দুষছেন খুচরা বিক্রেতাদের


২৭ জানুয়ারি ২০২০ ১১:০০ | আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২০ ১১:৪৬
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: রাজধানীর খুচরা বাজারে ফের বেড়েছে চালের দাম। পাইকারি বিক্রেতারাও জানিয়েছেন, বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়েছে একশ থেকে দুইশ টাকা। তবে মিল মালিকদের দাবি, মিল গেটে চালের দাম বাড়ানো হয়নি। বরং এটি খুচরা ব্যবসায়ীদের কারসাজি।

তবে চাল ব্যবসায়ীরা একে অপরকে দোষারোপ করলেও প্রতিছরই এ সময়ে চালের দাম কিছুটা বেড়ে থাকে। ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন অন্তত তিন মাস পরে কৃষকের ঘরে বোরো ধান উঠবে। আর সেসময়ই কেবল কমতে পারে চালের দাম।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের খুচরা বাজারে মিনিকেট ৫৫ টাকা, আটাশ ৪০ টাকা ও নাজিরশাইল ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে যা বিক্রি হয়েছিল ৫০ টাকা, ৩৬ টাকা ও ৫৫ টাকায়।

বিজ্ঞাপন

কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে মায়ের দোয়া স্টোরের কর্মচারী বাবলু জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে সবধরনের চালের দাম অন্তত পাঁচ টাকা বেড়েছে। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে প্রতি কেজিতে চালের দাম বাড়ে পাঁচ টাকা। তখন মিনিকেট ৫০ টাকা, আটাশ ৪০ টাকা ও নাজির ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। তারও আগে অক্টোবরে মিনিকেট ৪৫ টাকা, আটাশ ৩৫ টাকা ও নাজিরশাইল ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

মেসার্স হাজী ইসমাইল অ্যান্ড সন্স-এর মালিক জসিম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘চালের বাজার এখন কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। তবে প্রতিবছরই এই সময় চালের দাম বাড়ে। মৌসুম শেষ হওয়ার কারণেই চালের দাম বাড়ছে। কিন্তু তুলনামূলকভাবে এবার চালের দাম একটু বেশিই বেড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈশাখে মিনিকেট ওঠে। কিছুদিন পর বোরো রোপণ শুরু হবে। দুই-তিন মাস পর বাজারে নতুন করে মিনিকেট চাল আসবে। এই সময়ে মিনিকেট চালের দাম কিছুটা বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু নাজিরশাইল চালের দাম বাড়াটা অস্বাভাবিক। কারণ কিছুদিন আগেই কাটারিভোগ বা নাজিরশাইল জাতীয় চাল উঠেছে।’

এক প্রশ্নের উত্তরে জসিম উদ্দিন আরও বলেন, ‘মিলালরা এখনো বলছে বাজারে ধান কম। ধানের দাম বেশি থাকার কারণে চালের দাম বেশি। কিন্তু প্রতিবছরই মৌসুম শেষে ধানের দাম কিছুটা বাড়ে।’ তিনি জানান, বর্তমানে প্রকারভেদে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) মিনিকেট চাল ২৩৫০ থেকে ২৪০০ টাকা, আটাশ ১৬০০ থেকে ২১০০ টাকা ও নাজির ২২০০ থেকে ২৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহ দুই আগেও মিনিকেট ২২৫০ থেকে ২৩০০, আটাশ ১৫০০ থেকে ১৮০০ ও নাজির ২১০০ থেকে ২৬০০ টাকা বস্তা দরে বিক্রি হয়েছে।

কয়েকদিন আগে শেষ হয়েছে আমনের মৌসুম। এবার উৎপাদনও ভালো। এ মৌসুমে কৃষকরা আমনের দাম কিছুটা বেশি পেয়েছে বলে এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তথ্য এসেছে। সবমিলিয়ে এবার অন্য বছরের চেয়ে ধানের দাম কিছুটা বাড়তি। আর কৃষকের গোলায় বোরো ধানের মজুদ এখন প্রায় শেষের পথে। দেশের কোথাও কোথাও এরই মধ্যে বোরো রোপণ শুরু হয়েছে। নতুন করে বোরো ধান উঠতে সময় লাগবে অন্তত তিন মাস।

অন্যদিকে, গেল বোরো মৌসুমে প্রায় ২ কোটি মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছিল। বাম্পার ফলন ও দাম না পেয়ে মাঠেই ধান পুড়িয়ে ফেলেছিল কৃষক। এ ঘটনায় সরকার নড়েচড়ে বসলেও ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে পারেনি। অভিযোগ ছিল, মিলাররা ঠিকমতো ধান কিনছেন না। বাধ্য হয়ে ৫০০ টাকা মণেও ধান বিক্রি করতে হয়েছিল কৃষককে। চাল আমদানিতে শুল্ক দ্বিগুণ করা হলেও মাঠে তার ফল লক্ষ্য করা যায়নি। তবে গেল বছরের অক্টোবর থেকেই চালের দাম কিছুটা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে।

জানতে চাইলে নওগাঁ ধান-চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি নিরোধ চন্দ্র সাহা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এখানে চালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। এখন চালের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।’

বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘দেশে কোথাও চালের দাম বাড়েনি। আমাদের মতে চালের দাম স্বাভাবিকই রয়েছে। ২৫ জেলার মিলারদের সঙ্গে কথা বৈঠক করে জেনেছি কোনো মিলার চালের দাম বাড়ায়নি। সরকার হয়তো খুচরা বিক্রেতাদের খপ্পরে পড়েছে। এক্ষেত্রে সরকারকে খুচরা বাজারই মনিটরিং করতে হবে।’

খুচরা বাজার চালের দাম বৃদ্ধি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর