ময়মনসিংহের উদ্যোক্তারা নিজেরাই তৈরি করছেন পাটপণ্য
২৮ জানুয়ারি ২০২০ ০৮:২১
ময়মনসিংহ: যে সোনালী আঁশ হারিয়ে গেছে তা আবার ফিরে আসছে অন্যরূপে। শুধু বাজারের চটের ব্যাগই নয়, যেকোনো শপিং মলে দেখা যাবে নারীদের জন্য হাল ফ্যাশনের পাটের ব্যাগ। করপোরেট অফিসের বসদের জন্যও আছে দামি পাটের ব্যাগ। পাটের আঁশ কিছুটা গরম বলে শীতের পোশাক হিসেবে বেশি ব্যবহার হচ্ছে। তবে আজকাল আরো সুক্ষ্ণ হিসেবে শাড়িও তৈরি হচ্ছে। হচ্ছে, জুতা স্যান্ডেল। আর নানারকম শো-পিছ এখন অনেক সৌখিন বাড়ির ড্রইং-ডাইনিং রুমে পাওয়া যায়।
এমনিভাবে ময়মনসিংহেও এখন পাটের নানা পণ্যের সমাহার দেখা যাচ্ছে। তৈরি হয়েছেন অনেক উদ্যোক্তা। তারাই এখন তৈরি করছেন নানা পণ্য।
নারী উদ্যোক্তা হাফিজা আক্তার বলেন, আগে শুধুমাত্র চটের বা ছালার ব্যাগ, হাড়ি-পাতিল রাখার ছিকা, টেবিল দানি ব্যবহার হতো বেশি। এখন বিভিন্ন ধরণের পণ্য তৈরি হচ্ছে। সৌখিন ক্রেতারাও বাড়িতে এসব রাখছেন। চাহিদা তৈরি হওয়ায় কিছু উদ্যোমী নারী উদ্যোক্তা এসব পণ্য তৈরি ও বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।
তিনি বলেন, উৎপাদিত পাট পণ্য ব্যবহার ও বাজারজাতকরণের অপ্রতুল পরিবেশের কারণে এ সম্ভাবনাময় শিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছিল। বর্তমান সরকারের সুদৃষ্টি ও গতিশীলতায় সোনালী আঁশ আজ আবারো ফিরছে নতুন ভাবে।
শহরের নতুনবাজার এলাকার ইত্যাদি কারুপণ্য নামের প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার রোকেয়া বেগম বলেন, দেশের বাজারে এর ব্যাপকতা বাড়াতে হবে। দেশেও আরও বেশি চাহিদা তৈরি করতে হবে। এতে মান উন্নত করা গেলে পাওয়া যাবে দামও। এজন্য সরকারের প্রচার ও উদ্যোগী মনোভাব খুব প্রয়োজন। কারণ দেশের সৌখিন মানুষরা বেশিরভাগ পাটপণ্যই কিনছেন দেশের সৌখিন মানুষেরা। আর দেশের বাইরে পাঠানো হচ্ছে উপহার হিসেবে।
জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি বাংলাদেশ (নাসিব) ময়মনসিংহ মহানগর সভাপতি জহিরুল ইসলাম আকন্দ গাজী লিটন বলেন, এ শিল্পকে নব রূপে দেশের মানুষের কাছে নিয়ে যেতে ও পণ্যের বাজার তৈরিতে প্রতিনিয়ত কাজ করছে বর্তমান সরকার। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করে আর্ন্তজাতিক বাজারে এ পণ্যের প্রসার ও বাজার তৈরি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।
জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি বাংলাদেশ (নাসিব) কেন্দ্রীয় সভাপতি মির্জা নূরুল গণী শোভন বলেন, (সিআইপি) সময়ের বিবর্তনে কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া এ সম্ভাবনাময় পাট শিল্প বহুমুখী করতে তরুণ সমাজের এগিয়ে আসার সুযোগ রয়েছে। এই শিল্পের বেকারত্ব দূর করা, তরুণদের তথ্য, ব্যাংক ঋণের সমস্যা ও বাজারজাতকরণ নিয়ে কথা বলেন এ ব্যবসায়ী নেতা।
দেশের নিজস্ব এই পণ্যটি বিলুপ্ত অবস্থা থেকে আবার ফিরে আসছে। সচেতনতা, প্রচারণা, চাহিদা তৈরি ও বাজারজাত করতে এটিই দেশের অর্থনীতির জন্য বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তাই সরকারকে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে হবে।