‘নির্বাচিত হলে উত্তর সিটি দুর্নীতিমুক্ত করার কাজ অব্যাহত থাকবে’
২৮ জানুয়ারি ২০২০ ১৫:১০
ঢাকা: আগের মেয়াদে মেয়র হিসেবে সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতিমুক্ত করার যে কাজ শুরু হয়েছিল নতুন করে নির্বাচিত হলে তা অব্যাহত থাকবে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাংবাদিক ফোরামের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম।
এর আগের মেয়াদের ৯ মাসের দায়িত্বপালনের সময়ের একটি ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি একদিন সিটি করপোরেশনের এক মিটিংয়ে বলেছিলাম, হোল্ডিং ট্যাক্স মানুষ বাসায় বসে অনলাইনের মাধ্যমেই দিতে পারবেন। কিন্তু এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, স্যার তা সম্ভব না। তখনই আমার সন্দেহ জাগে। আমি তার ফাইল খুঁজে বের করি। তখন আমি জানতে পারি, তিনি একটি বড় রাজনৈতিক দলের নেতা। আরও খবর নিয়ে জানতে পারি, ঢাকায় তার আট থেকে দশটি বাড়ি আছে। পরে তার ফাইল দেখে জানতে পারি আয়ের উৎস। হোল্ডিং ট্যাক্সের যে টাকা আসে, অর্ধেক টাকা নিজের পকেটে নিয়ে বাকি অর্ধেক সরকারি কোষাগারে দিতেন তিনি।’
‘আমি যখন তাঁকে চাকরিচ্যুত করতে যাই তখন অনেকে বলেছেন, ‘স্যার এটা আপনি পারবেন না। তখন বলেছিলাম, আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব। প্রধানমন্ত্রী আমাকে যখন দায়িত্ব দিয়েছেন, তখন বলেছেন, কালো চশমা পড়ো, আর আমার মোবাইল নম্বর রাখো। যেই দুর্নীতি করুক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’ পরে ওই কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করে আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানাই। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ওয়েলডান বলে সামনে এগিয়ে যেতে বলেন। এটাই শেখ হাসিনার দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ ‘ যোগ করেন আতিকুল ইসলাম।
আতিক আরো বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার আট দিনের মাথায় এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড হয়। এর কিছুদিন পর ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করে। এই মহামারী ঠেকাতে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। দু:খের বিষয় হলো, সিটি করপোরেশনের কোনো কীটতত্ত্ববিদ নেই। আর যারা মশার ওষুধ ছিটান, তাদের টেককেয়ার করার লোক নেই। যেমন গার্মেন্টস সেক্টরে একটি প্রোডাক্ট তৈরির পর তার কোয়ালিটি মেইনটেইন করা হয়। কিন্তু সিটি করপোরেশনের সেটা ছিল না। আমি চেষ্টা করব, নির্বাচিত হলে এ বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়ার।
তিনি বলেন, গতকাল এখানে (প্রেস ক্লাবে) আমার প্রতিদ্বন্দ্বীরা এসেছিলেন। আগামীকাল হয়তো অন্য কেউ আসবেন। আজ আমি এসেছি। একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে বলে আশা করছি।
ঢাকার দুটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যত বেশি ভোটার উপস্থিত হবে, নৌকার বিজয় তত বেশি সুনিশ্চিত হবে বলেও মন্তব্য করেন আতিকুল ইসলাম।
এ সময় তিনি ১ ফেব্রুয়ারি সকল ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন অবজারভার সম্পাদক ও সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেন দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নেতা ও সংসদ সদস্য মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক নেতা আবদুল জলিল ভূঁইয়া, মনজুরুল আহসান বুলবুল, ওমর ফারুক, শাবান মাহমুদ, শাহেদ চৌধুরী ও সোহেল হায়দার চৌধুরীসহ অন্যরা।