আগের বছরের চেয়ে আয় বেড়েছে গ্রামীণফোনের
২৮ জানুয়ারি ২০২০ ১৯:৩৯
ঢাকা: ২০১৯ সালে ১৪ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে গ্রামীণফোন, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। বছরটিতে শীর্ষ স্থানীয় এই মোবাইল অপারেটরের ইন্টারনেট সেবা থেকে আয় বেড়েছে ১৭ শতাংশ ও ভয়েস থেকে বেড়েছে সাড়ে ৮ শতাংশ।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) আর্থিক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গ্রামীণফোন এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে গ্রামীণফোন জানিয়েছে, ২০১৯ সালের শেষ প্রান্তিকে মোট রাজস্ব দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬২০ কোটি টাকা, যা আগের বছর একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ২ বেশি। চতুর্থ প্রান্তিকে ৭ লাখ নতুন গ্রাহক গ্রামীণফোন নেটওয়ার্কে যোগ দিয়েছে । ২০১৯ সাল শেষে আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে মোট গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৬৫ লাখ। মোট গ্রাহকের মধ্যে ৪ কোটি ৬ লাখ বা ৫৩ দশমিক ১ শতাংশ ইন্টারনেট সেবা ব্যবহারকারী।
গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল ফোলি বলেন, ‘রেগুলেটরি দৃষ্টিকোণ থেকে ২০১৯ সাল গ্রামীণফোন একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে পার করেছে। নানা ধরনের বিধিনিষেধ আমাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যহত করেছে। তবে চমৎকারভাবে বাজার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং নেটওয়ার্কে আমাদের শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখার মাধ্যমে আমরা ব্যবসায়িক সাফল্য অজর্ন করতে সক্ষম হয়েছি। পরিকল্পিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চতুর্থ প্রান্তিকে ফোরজি সাইটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার। বছর শেষে আমাদের নেটওয়ার্কে ফোরজি গ্রাহকের সংখ্যা ১ কোটি ১৯ লাখে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। ইন্টারনেট সেবাখাতে এর ব্যবহার ও রাজস্ব অর্জন দুটি ক্ষেত্রেই প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি।’
মাইকেল ফোলি আরও বলেন, ‘মোবাইল সেবাখাতের উন্নয়ন ও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিতে এর অবদান ধরে রাখতে সরকার ও খাতসংশ্লিষ্টদের মধ্যে যেকোনো অর্থপূর্ণ আলোচনা করতে আমাদের প্রতিশ্রুতি আমরা পুনর্ব্যক্ত করতে চাই। ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ মার্জিনসহ ২০১৯ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে মোট মুনাফার পরিমান দাঁড়িয়েছে ৯২০ কোটি টাকা। শেষ প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬ দশমিক ৮১ টাকা।’
গ্রামীণফোনের সিএফও ইয়েন্স বেকার বলেন, ‘শক্তিশালী মার্জিন নিয়ে গ্রামীণফোন ২০১৯ সালে ব্যবসায়িক সাফল্য অজর্ন করেছে। চতুর্থ প্রান্তিকে আমরা তীব্র প্রতিযোগিতার পরও ইন্টারনেট সেবা খাতে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জনে সফল হয়েছি। আমাদের শেয়ারহোল্ডার ও গ্রাহকদের জন্য আরও বেশি মানসম্মত সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে শক্তিশালী নেটওর্য়াক নির্মাণ ও বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে আমাদের বিনিয়োগ অব্যাহত থাকবে। আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই, শেয়ারহোল্ডারদের জন্য আমাদের পরিচালনা পর্ষদ প্রতি শেয়ারে ১৩ টাকা লভ্যাংশের প্রস্তাব করেছেন।’
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) পরিচালনা পর্ষদের সভায় গ্রামীণফোনের পরিচালনা পর্ষদ ২০১৯ সালের জন্য প্রতি শেয়ারে ১৩টাকা লভ্যাংশ প্রস্তাব করেছেন। এর মাধ্যমে মোট নগদ লভ্যাংশের পরিমান দাঁড়ালো ১৩০ শতাংশ, যা কর পরবর্তী লভ্যাংশের ৫০ দশমিক ৮৬ শতাংশ (৩৫ শতাংশ অন্তর্বর্তী লভ্যাংশসহ)। চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল বার্ষিক সাধারণ সভায় অনুমোদন সাপেক্ষে ১৭ ফেব্রুয়ারি রেকর্ড ডেট অনুযায়ী শেয়ারহোল্ডাররা এই লভ্যাংশের যোগ্য হবেন।
চতুর্থ প্রান্তিকে নেটওয়ার্ক উন্নয়নে গ্রামীণফোন ৩৯০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এনওসি বন্ধের কারণে গ্রামীণফোনকে পরিকল্পিত বিনিয়োগের চেয়ে কম বিনিয়োগ করতে হয়েছে। শেষ প্রান্তিকে নেটওর্য়াক আধুনিকায়নের পাশাপাশি ৭১৫টি নতুন ফোরজি সাইট করা হয়েছে। ২০১৯ শেষে গ্রামীণফোনের মোট নেটওয়ার্ক সাইটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৫০৮ টি। গ্রামীণফোন ২০১৯ সালে কর, ভ্যাট, ফোরজি লাইসেন্স ফি, স্পেকট্রাম অ্যাসাইনমেন্ট ফি, ডিউটি ও অফিস বাবদ সরকারি কোষাগারে ৮ হাজার ৫১০ কোটি টাকা দিয়েছে, যা মোট আয়ের ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ।