আড়ংয়ের ট্রায়াল রুমে ভিডিও ধারণের কথা স্বীকার
২৮ জানুয়ারি ২০২০ ২২:০৬
ঢাকা: বনানীতে আড়ংয়ের ওয়াশ রুমে গোপন ক্যামেরায় নারী বিক্রয়কর্মীর পোশাক বদলের ভিডিও ছাড়াও একাধিক নারীর পোশাক বদলের ভিডিও তৈরির কথা স্বীকার করেছে আটক সিরাজুল ইসলাম সজীব। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ধরা পড়ার পর আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ধীমান চন্দ্র মণ্ডলের আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
এর আগে একদিনের রিমাণ্ড শেষে সজীবকে আদালতে নিয়ে আসেন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের (সাইবার ইউনিট) পুলিশ পরিদর্শক আজহারুল ইসলাম।
সেখানে আসামি নিজের ইচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। সে জানায় এর আগেও সে একাধিক নারীর পোশাক পরিবর্তনের ভিডিও তৈরি ফাঁদে ফেলে অর্থ ও অনৈতিক সুবিধা নিয়েছে।
আড়ংয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সজীব আড়ংয়ের বনানী শাখার কর্মী ছিলেন। এক নারীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে গত ডিসেম্বরে আড়ংয়ের অভ্যান্তরীণ তদন্তে সজীবকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়। সিসি ক্যামেরা দেখে তার হেনস্থার বিষয়টি ধরা পড়েছিল। তবে তার কাছে যে গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা আগের ভিডিও ছিল তা জানা ছিল না। এখন থেকে আমরা আরও বেশি সজাগ থাকব।
মামলার এজাহারে জানা যায়, এক নারীর করা অভিযোগের ভিত্তিতে সিরাজুল ইসলাম সজীবকে রাজধানীর কাফরুল থানাধীন এলাকা থেকে শনিবার (২৫ জানুয়ারি) গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে আদালতে পাঠিয়ে এক দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে সজীব জানায়, আড়ংয়ের বনানী শাখায় চাকরিরত অবস্থায় সজীব দুই বছর ধরে ড্রেসিং রুমে গোপন ক্যামেরা বসিয়ে অনেক নারীর পোশাক পরিবর্তনের ভিডিও ধারণ করেছে। ওইসব ভিডিও পরে ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ভিকটিমদের কাছে পাঠিয়ে অর্থ আদায় করতো।
গত সপ্তাহে সে এক নারী সহকর্মীর ফেসবুক মেসেঞ্জারে ড্রেসিং রুমের ভিডিও পাঠিয়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। ওই নারী পরে আড়ংয়ের সহযোগিতায় ডিএমপির সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ দেন। এরপর পুলিশ অনুসন্ধান করে ২৫ জানুয়ারি রাতে কাফরুল এলাকা থেকে সজীবকে গ্রেফতার করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির সাইবার ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নাজমুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘একই কোম্পানিতে চাকরি করে নারী সহকর্মীদের ড্রেসিং রুমের দৃশ্য গোপন ক্যামেরায় ধারণ করেছে। এরপর আবার সেই ভিডিও ওই নারীর মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে অনৈতিক প্রস্তাব দিত। প্রতারণা করে অনেকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকাও নিয়েছে। বিবৃত মানসিকতা থেকেই সে এটা করতে পেরেছে। আরও আগে অভিযোগ করা উচিত ছিল। যাইহোক আসামি ধরা পড়েছে এবং স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে খুব শিগগিরই তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হবে। এর বাইরে সকলকে নিজের অবস্থান থেকে সচেতন হতে হবে। কেউ অপরাধ করলে সঙ্গে সঙ্গে তা পুলিশকে অবহিত করার জন্য আহ্বান জানান।