পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা কামনা
২৯ জানুয়ারি ২০২০ ২০:৫৮
ঢাকা: অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। বলা হয়েছে, এই পরিকল্পনার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ও সরকারের দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। তবে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পাশাপাশি রোহিঙ্গা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মিয়ানমার আন্তরিক হবে বলে আশাবাদ জানানো হয়।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) মূল অধিবেশনে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে এ সহায়তা চেয়েছে সরকার। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুই দিনের এ সম্মেলন শুরু হয়েছে।
এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়রুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম। বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, অর্থ বিভাগের সচিব আবদুর রউফ, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনজিং তেরিংক, ডিএফআইডির বাংলাদেশ প্রধান জুডিথ হাবার্টসন ও ব্র্যাক গ্লোবাল ব্র্যান্ডের চেয়ারম্যান আমিরা হক।
অধিবেশনে মূল প্রবন্ধে ড. সামসুল আলম বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় আগামী পাঁচ বছরে ৭৭ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে ১ কোটি ৫ লাখ। মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হবে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৫ সালে দেশের দারিদ্র্যের হার দাঁড়াবে ১২ দশমিক ১৭ শতাংশে। এছাড়া অতিদারিদ্র্যের হার হবে ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। পরিকল্পনার শেষ বছরে গিয়ে জাতীয় সঞ্চয়ের হার দাঁড়াবে জিডিপির ৩৬ দশমিক ২ শতাংশে। ২০২১-২৫ সাল পর্যন্ত এ অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে সরকার। লক্ষ্য পূরণে উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা প্রয়োজন।
মূল প্রবন্ধে আরও বলা হয়েছে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুত অর্থ সরবরাহ করা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অতিরিক্ত বিনিয়োগ, প্রতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও টেকসইকরণ, মানব উন্নয়ন, উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ডিউটি ফ্রি কোটা সুবিধা চলমান রাখা, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়তা, কর্মসংস্থান তৈরি, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য নিরসনে কার্যকর সহায়তা এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে সহায়তা প্রয়োজন।
ড. আলম আরও বলেন, পরিকল্পনায় গ্রামীণ উন্নয়ন, সঞ্চয় বিনিয়োগে নিয়ে আসা, তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, মেগা প্রকল্পে ব্যাপক বিনিয়োগ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়ন, দারিদ্র্য নিরসন ও আঞ্চলিক বৈষম্য হ্রাস, টেকসই কৃষি ও সবার জন্য পুষ্টির নিশ্চয়তা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন নিশ্চিত করা, স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করাসহ বিভিন্ন ইস্যুকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
ইআরডি সূত্র জানায়, ‘ইফেকটিভ পার্টনারশিপ ফর সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট’ স্লোগানকে সামনে রেখে বিডিএফের আয়োজন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। এবারের বৈঠকটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী স্মরণে উৎসর্গ করা হয়েছে। সম্মেলনের প্রথম দিন চারটি কর্ম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এগুলো হচ্ছে— প্রাইভেট সেক্টর নগেজমেন্ট অ্যান্ড ট্রেড ফ্যাসিলেটেশন, পার্টনারশিপ ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ইঁস ফিন্যান্সিং, ইনোভেটিভ ফিন্যান্সিং ফর আ সেলফ-রিলায়েন্ট বাংলাদেশ এবং রুরাল ট্রান্সফরমেশন: ক্রিয়েটিং অপাচুনিটিজ ফর অল।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গা আমাদের কোনো বিষয় নয়। কিন্তু আমরা চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছি। তাদের জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। আমরা তাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসন আশা করছি। কৃষি খাতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নয়নের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। আমাদের রয়েছে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। ই-কমার্স উন্নত হচ্ছে। এজেন্ট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং প্রসার লাভ করছে। মেধাবী তরুণ প্রজন্মকে কাজে লাগিয়ে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারি।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা উন্নয়ন ফোরাম উন্নয়ন সহযোগী বিডিএফ