কেন্দ্রে যাচ্ছে ভোটের সরঞ্জাম
৩১ জানুয়ারি ২০২০ ১২:৫৭
ঢাকা: প্রচার-প্রচারণা শেষে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এখন কেবল বাকি ভোটগ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা। এরই মধ্যে সেই প্রস্তুতিও শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যেতে শুরু করেছে ভোটের সরঞ্জাম। আগের নির্বাচনগুলোর থেকে অবশ্য এ বিষয়ক প্রস্তুতিটা একটু ভিন্ন। কারণ এর আগে ব্যালটে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও এই প্রথমবার ঢাকা সিটিতে সবগুলো কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় মতিঝিল টিআ্যান্ডটি উচ্চ বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোটগ্রহণের জন্য ইএভিএম, এলইডি মনিটর, ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেশিন, স্ক্যানার, বুথের জন্য ত্রিপল, তাঁবু, বোর্ডশিটসহ প্রয়োজনীয় যাবতীয় সরঞ্জাম আলাদা আলাদা গাড়িতে করে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে সব কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় এসব সরঞ্জাম পাঠানোর কাজ শেষ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।
এদিকে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার পর ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে নির্বাচনি সরঞ্জাম বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে উত্তরে আটটি ও দক্ষিণ সিটির ১১টি পয়েন্ট থেকে সকাল সাড়ে ১০টায় একযোগে নির্বাচনি সরঞ্জাম বিতরণ শুরু হয়। উত্তর সিটির পয়েন্টগুলো হলো— উত্তরা কমিউনিটি সেন্টার, বনানী বিদ্যানিকেতন, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ বনশ্রী শাখা, ডেন্টাল কলেজ মিরপুর-১৪, মিরপুর বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজ (বালক শাখা), ন্যাশনাল বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় মিরপুর-২, তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ।
অন্যদিকে দক্ষিণ সিটির মালামাল বিতরণের কেন্দ্রগুলো হলো— খিলগাঁও মডেল কলেজ, টিঅ্যান্ডটি উচ্চ বিদ্যালয় মতিঝিল, টিকাটুলির কামরুন্নেসা স্কুল ও সেন্ট্রাল উইমেন কলেজ, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, আজিমপুর গালর্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা, কামরাঙ্গীচর শেখ জামাল স্কুল, দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও দোলাইর পাড় স্কুল কেন্দ্র।
এছাড়া নির্বাচনের কিছু সরঞ্জাম বিজি প্রেস থেকে সরাসরি ভোটকেন্দ্রে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। অবশ্য সব কেন্দ্রের ভোট ইভিএমে গ্রহণের সিদ্ধান্তে সরকারি ছাপাখানার কাজ এবার অনেকটাই কমে এসেছে বলে জানা গেছে নির্বাচন কমিশন সূত্র থেকে।
আগামীকাল ১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দুই সিটিতে একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। সিটি নির্বাচনে মেয়রপ্রার্থীরা দলীয় প্রতীকে এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এবার প্রথমবারের মতো ঢাকার দুই সিটির সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট নেওয়া হবে। নির্বাচনে মোট ৭৫৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে প্রার্থী ১৩ জন, কাউন্সিলর পদে ৭৪৪ জন।
ঢাকা উত্তর সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন। এই সিটিতে ওয়ার্ড ৫৪টি, সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড ১৮টি। মোট ভোটকেন্দ্র ১ হাজার ৩৪৯টি, ভোটকক্ষ ৭ হাজার ৫১৬টি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে মোট ভোটার ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪৮৮ জন। এই সিটিতে ভোটকেন্দ্র ১ হাজার ১২৪টি, ভোটকক্ষ রয়েছে পাঁচ হাজার ৯৯৮টি। দক্ষিণ সিটিতে মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৭৫টি, সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড ২৫টি।
ঢাকা উত্তর সিটিতে চূড়ান্তভাবে মেয়র পদে ছয় প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন— নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির তাবিথ আউয়াল, বাঘ প্রতীকে পিডিপি’র শাহীন খান, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ফজলে বারী মাসউদ, কাস্তে প্রতীকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাজেদুল হক ও আম প্রতীক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনিসুর রহমান দেওয়ান।
অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত জন। তারা হলেন— নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি’র ইশরাক হোসেন, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আবদুর রহমান, ডাব প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আক্তারুজ্জামান অরফে আয়াতউল্লাহ, আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) বাহরানে সুলতান বাহরান এবং মাছ প্রতীক নিয়ে গণফ্রন্টের আবদুস সামাদ সুজন।