ইভিএমে ভোট জালিয়াতির কোনো সুযোগ নেই: সিইসি
৩১ জানুয়ারি ২০২০ ১৮:২৬
ঢাকা: ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) সংরক্ষিথ হলেও কেন্দ্রে যাওয়ার পর ভোট জেনারেট বা আঙুলের ছাপ দেওয়ার পর আরেকজন ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকে। এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘এত সহজ নাকি! এত সহজ! প্রশ্নই ওঠে না। পুরো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সিইসি বলেন, ‘আগে যখন ব্যালটে ভোট হতো, তখন ছিনতাই করে নিলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেত। কিন্তু ওইরকম করা কী সম্ভব? ইভিএম এমন একটা জিনিস, যেখানে ভোটারকে কেন্দ্রে যেতে হবে। এটা আমাদের অর্জন। আগে ভোটার যেত বা না যেত, ভোট হয়ে যেতে পারত। এখন আর সেই সুযোগ নেই।’
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগের দিন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সিইসি।
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে, তারা কোনো এক প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে নেয়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কমিশনের পদক্ষেপ কী থাকবে? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘প্রথমে আমার এজেন্টদের প্রতি অনুরোধ, তারা দায়িত্ব নিয়ে যেন সেখানে থাকেন। একজন বলল, আর বের হয়ে যাবেন, সেটা যেন না করেন। এ ধরনের ঘটনা না ঘটার সম্ভাবনাই বেশি। যদি ঘটেও, সঙ্গে সঙ্গে প্রিজাডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ম্যাজিস্ট্রেট, বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহলদার বাহিনীর সদস্যদের সাহায্য নেবে। সুতরাং এ ধরনের ঘটনা ঘটার আশঙ্কা নেই। যদি নিজে থেকে বেরিয়ে না যায়, তাহলে এজেন্টদের সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নাই।
তিনি বলেন, ‘তবে অনেক সময় এজেন্ট না জানিয়ে বেরিয়ে যায়। এ রকম অনেক সময় হয়। তখন বলে যে, আমাদের এজেন্ট নেই বা বের করে দিয়েছে। এ রকম করলে তো হবে না।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে এজেন্টদের নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়ে বলেছেন বলেও জানান সিইসি। নূরুল হুদা বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ যদি থাকে। অভিযোগ করলেও যদি না শোনে তাহলে আমাদেরকে সঙ্গে সঙ্গে জানাতে হবে। রিটার্নিং অফিসারের কাছে জানাতে হবে। নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত আসার দরকার নাই, রিটার্নিং কর্মকর্তাই যথেষ্ট।’
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি শেষ জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে পর্যালোচনা করেছি। আমি নির্বাচন সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম দেখেছি। টেলিফোনে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের (রিটার্নিং কর্মকর্তা) পক্ষ থেকে কোনো রকমের অসুবিধা নেই। নির্বাচনের মালামাল কেন্দ্রে কেন্দ্রে বোধ হয় পৌঁছে গেছে। তাদের পক্ষ থেকে কোথাও কোনো রকমের আশঙ্কা নেই নির্বাচনের বিষয়ে।’
নূরুল হুদা বলেন, ‘ভোটাররা নির্বিঘ্নে, অবাধে ভোট দেওয়ার জন্য চলে আসবে। অসুবিধা থাকার কথাও না। নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় ভোটার-সর্মথকরা যেভাবে রাস্তায় নেমে এসেছে, তা ভোটের একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, সুন্দর পরিবেশ। বিশেষ করে সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আমরা সবসময় বলি যে, নির্বাচন যদি প্রতিযোগিতামূলক হয় এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়, তাহলে নির্বাচনের পরিবেশ উন্নততর হয়। সেই পরিবেশ এখন বিরাজমান আছে।’
প্রসঙ্গত, শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দুই সিটির ২৪৮৮ কেন্দ্রের সবগুলো কেন্দ্রে ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া হবে।