শেষ বেলায় ভোটার বেড়েছে অনেক কেন্দ্রে
১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৬:০৩
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সকাল থেকেই ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশ কম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেও সেই সংখ্যায় খুব একটা পরিবর্তন আসেনি। তবে দুপুর ১টার পর থেকে কিছু কিছু এলাকার কেন্দ্রে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভোটারদের উপস্থিতি দেখা গেছে। এর মধ্যে কিছু কিছু কেন্দ্রে বিকেল ৩টা নাগাদ ৩০ শতাংশেরও বেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা।
রাজধানীর পুরান ঢাকার বেগমগঞ্জ বালক বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৬৮১ নম্বর ভোটকেন্দ্র) কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার গুলজার হসেন শিবলি সারাবাংলাকে জানান, এই কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা তিন হাজার। বিকেল ৩টা পর্যন্ত সাতশ জন ভোট দিয়েছেন। সেই হিসাবে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার একঘণ্টা আগে কেন্দ্রটিতে ভোট পড়েছে ২৩ শতাংশ।
বাড্ডা এলাকার ভয়েজার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল কেন্দ্রটির প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জানান, তার কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২৫৪৭ জন। বিকেল ৩টা পর্যন্ত কেন্দ্রটিতে ৩৫ থেকে ৩৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। তিনি আরও জানালেন, এই কেন্দ্রে সকালের দিকেই ভোটারের চাপ বেশি। শেষ বেলায় ভোটারদের উপস্থিতি তেমন নেই।
প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জানান, তার কেন্দ্রে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ম্যাচ করতে পারেননি পাঁচ জন। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের সহায়তা নিয়ে তারা ভোট দিয়েছেন। তাদের ফরম সংগ্রহ করে নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হবে।
নুরেরচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জানান, এই বিদ্যালয়ে চারটি কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত নিচ তলার কেন্দ্রে ২০৩৩ জন ভোটারের মধ্যে ২৮ শতাংশ ভোট দিয়েছেন। দ্বিতীয় তলার কেন্দ্রে ২১৮৬ ভোটারের মধ্যে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ২০ দশমিক ৬২ শতাংশ। তৃতীয় তলার কেন্দ্রে ২৩০৩ জন ভোটারের মধ্যে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ৩৩ শতাংশ। আর চতুর্থ তলার কেন্দ্রে ২৩২০ জন ভোটারের মধ্যে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ২০ শতাংশ।
এদিকে, রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জানিয়েছেন, তার কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ২২ শতাংশ।
তবে বুয়েটের ভোটকেন্দ্রটি সারাদিনই ফাঁকা ছিল। এই কেন্দ্রে ২৩৫৪ জন ভোটারের মধ্যে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন মাত্র ১২৩ জন, যা মোট ভোটারের মাত্র ৫ শতাংশ। ভোটের একঘণ্টা বাকি থাকলেও ওই সময়েও ভোটারদের উপস্থিতি তেমন দেখা যায়নি।
উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের নওয়াব হাবিবুল্লাহ স্কুল স্কুল অ্যান্ড কলেজে চারটি কেন্দ্র রয়েছে। এই স্কুলেরই একটি কেন্দ্রে ভোট দিয়েছিলেন উত্তর সিটির আওয়ামী লীগ প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। স্কুলের ১৩ নম্বর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার বাগন্ময়ী দত্ত জানিয়েছেন, দুপুর ২টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ২২২৯ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১৬৪ জন, যা মোট ভোটারের মাত্র ৭ শতাংশ।
১৩ নম্বর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আবদুস সালাম সারাবাংলাকে বলেন, আমার কেন্দ্রে মোট দুই হাজার ২২৯ জন ভোটার। এর মধ্যে দুপুর ২টা পর্যন্ত ১৬৪ জন ভোট দিয়েছিল। এরপরে ভোটার সংখ্যা বেড়েছে বলে আমরা দেখেছি। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ৩৬৪ ভোট পড়েছে বলে জানান তিনি।
তেজগাঁওয়ের সিভিল এভিয়েশন উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার খন্দকার মাহবুবুর রহমান বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষে সারাবাংলাকে বলেন, এই কেন্দ্রে ভোটার ছিল ৩২৮৭ জন। ভোট পড়েছে ৯৯৬টি। ভোট পড়ার হার ৩০ শতাংশ।
একই স্কুলের আরেক কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার হাসানুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, আমার কেন্দ্রে ২৬১৪ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ৩৩৯টি। ভোট পড়ার হার ১৩ শতাংশ।
ডেমরা মাতুয়াইল ২ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের (৬৩ নম্বর ওয়ার্ড) প্রিজাইডিং অফিসার দেলোয়ার হোসেন বলেন, কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৯৪০ জন। বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭৬৩টি। ভোটের হার ৩৯ শতাংশ।
একই ওয়ার্ডের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হাফিজুর রহমান আলী একাডেমি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আসাদুল হক বলেন, ভোটার মোট ছিল ২১১০ জন। বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৬৯০টি, যা মোট ভোটারের ৩২ শতাংশ।
ডেমরার মাতুয়াইল ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার হাসানুজ্জামান বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে বলেন, এখানে ছয়টি বুথ রয়েছে। সবগুলো বুথ মিলিয়ে মোট ভোটার ছিল ২৩২৯ জন। ভোট দিয়েছেন ৮৭২ জন। ভোটের হার ৩৭ শতাংশ।
৬১ নম্বর ওয়ার্ডের কদমতলীর পূর্ব ধোলাইরপাড় শিশু মিতালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার তানভীর আহমেদ বলেন, এখানে মোট ভোটার ১৬৬৮ জন। বিকেল পৌঁনে ৪টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৪৫৩টি, যা মোট ভোটারের ২৭ শতাংশ।
শনির আখড়া বর্ণমালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার পরিমল চন্দ্র জানান, তার কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ১৯৯৫ জন। ভোটগ্রহণের শেষ সময়ের ৫ মিনিট আগ পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৫৩৭টি ভোট, যা মোট ভোটারের প্রায় ২৭ শতাংশ।