কিসের হরতাল!
২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১০:৩৫
ঢাকা: হরতাল ভেবে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে অনেকেই একটু দেরি করে ঘুম থেকে উঠেছেন, ভেবেছেন রাস্তা তো ফাঁকাই থাকবে, অল্প সময়েই কর্মস্থলে পৌঁছে যাবেন। কিন্তু পথে বেরিয়ে রীতিমতো মাথায় হাত তাদের। কেননা রাস্তায় বের হলে হরতাল বোঝার কোনো উপায়ই নেই।
রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই হরতালের ঘোষণা দেন।
তবে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে রাজধানীর পথে বেরিয়ে সেই অর্থে হরতালের দেখা মেলেনি। গণপরিবহণ অন্য দিনের তুলনায় সামান্য কম। যেগুলো আছে সেগুলেতোও প্রচণ্ড ভিড়। দিনের শুরুতে ব্যক্তিগত গাড়িও কিছুটা কম বেরিয়েছে। সেটাও আসলে পরিস্থিতি বোঝার জন্য। বেলা বাড়তেই বেড়েছে প্রায় সব ধরনের যান চলাচল। এখন পর্যন্ত ঢাকার জনজীবন স্বাভাবিকই বলা যায়।
কথা হয় বেশ কয়েকজন মানুষের কাছে। যারা রোজকার মতো আজ সকালেও বেরিয়েছেন কাজের উদ্দেশে।
অফিসে যাওয়ার পথে কথা হয় ইকরাম হোসেনের সঙ্গে। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আগে হরতাল হলে সকাল থেকে সকল প্রকার গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকতো। বিএনপির নেতা কর্মীদের মাঠে দেখা যেতো। কিন্তু তাদের কাউকে দেখা যাচ্ছে না। বিএনপি নির্বাচনে হেরে গিয়ে মন বুঝানো হরতাল দিয়েছে। তবে এখন যা চলছে সেটাকে হরতাল বলে না।’
দিশারি পরিবহন বাসের চালক রাশেদ জানান, প্রতিদিনের মতোই তিনি ভোরে মিরপুর-১ চিড়িয়াখানা এলাকা থেকে বাস নিয়ে বের হয়েছেন। কিন্তু কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত কোথাও হরতালের কোন প্রভাব দেখতে পাননি। রাস্তা সকালে অন্য সবদিন যেমন থাকে তেমনই দেখেছেন। কেউ যান চলাচলে বাধা দেয়নি, কোনো পিকেটিং নেই। এটা কিসের হরতাল! হরতাল বোঝার কোনো উপায়ই নেই।
সিএনজি চালক মো. মামুন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগে দেখতাম হরতাল মানে জ্বালাও, পোড়ায়, গাড়ি ভাংচুরসহ নানান প্রতিকূল পরিবেশ তৈরি করে রাখতো বিএনপি নেতা কর্মীরা। কিন্তু এখন আর সেই হরতাল নেই। বিএনপির নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতা না থাকা আর জেলের ভয়ে মাঠে নামে না। আমার মনে হয় বিএনপির কর্মীরা সবদিক বিবেচনা করেই নাম মাত্র হরতাল ডেকেছে।’
আদালতে মামলার শুনানি থাকায় সকাল সকাল ফার্মগেট থেকে বেরিয়েছিলেন নিম্ম আদালতের আইনজীবী আলমগীর হোসেন। ভেবেছিলেন যানবাহন পাবেন না, কতক্ষণ লাগে পৌঁছতে। কিন্তু রাস্তায় বেরিয়ে দেখলেন সব স্বাভাবিক। এখন উল্টো জলদি পৌঁছে বসে আছেন শুনানি শুরুর অপেক্ষায়।
রাজধানীর সব এলাকাতেই দোকানপাট স্বাভাবিক দিনের মতোই খুলেছে। খোলা রয়েছে অফিস-আদালত। সাধারণ মানুষ অন্যান্য দিনের মতোই নিজেদের কাজে বেরিয়েছেন।
দুই একজনকে হরতালের কথা জানতে চাইতেই তারা বলেন, কিসের হরতাল? এভাবে ডাক দিলেই হরতাল হয়?