পাঁচবিবি ভূমি অফিসে ৮ পদ শূন্য, বাড়ছে দুর্ভোগ
২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২২:৪৬
জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা ভূমি অফিসে দেড় বছর ধরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসি (ল্যান্ড) পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ নেই। এই ভূমি অফিসে আরও সাতটি পদই খালি। এতে করে এই কার্যালয় থেকে সেবা পেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
উপজেলার এই গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিসের ১২টি পদের মধ্যে এসি (ল্যান্ড), অফিস সহকারী, সার্ভেয়ার, সার্টিফিকেট পেশকার, ক্রেডিট চেকিং সহকারীসহ মোট আটটি পদ শূন্য রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বর্তমানে এসি (ল্যান্ড) হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করলেও জনবলের অভাবে উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ভূমি সংক্রান্ত সেবা কার্যক্রম চলছে ধীর গতিতে। নামজারি, জমা, খাজনা খারিজসহ জমিজাম সংক্রান্ত জরুরি বিষয়গুলির জন্য সাধারণ মানুষকে এ অফিসে সেবা নিতে এসে ঘুরতে হচ্ছে দিনের পর দিন। এ অফিসের লোকবলের অভাবে সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় কাজ করতে না পারার কারণে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা গ্রহণকারীরা।
পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জি ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, বাগজানা ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হক, পাঁচবিবি পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিবসহ জনপ্রতিনিধিরা জানান, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে এ অফিস থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসি (ল্যান্ড) এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। এ ছাড়া এর আগে ও পরে একই অফিসের ৭/৮টি পদে লোক না থাকায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আরও বলেন, এসি (ল্যান্ড) বদলি হয়ে যাওয়ার পর বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাদিম সারওয়ার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এতে জনদুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হলেও একদিকে ইউএনও বাড়তি চাপে পড়েছেন, অন্যদিকে সেবা গ্রহণকারীরাও সময়মতো পাচ্ছেন না তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা।
এ অফিসে লোকবল না থাকায় সাধারণ মানুষ সময় মত জমির প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবসী। ফলে তারা চিকিৎসা, ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ, বিয়ে, বিদেশ যাত্রাসহ অন্যান্য জরুরি কাজে টাকার প্রয়োজনে সময়মতো জমি বেচা-কেনা করতে পারছেন না। এ ছাড়াও একই কারণে অনেককেই পড়তে হচ্ছে বহুমুখী সংকটে।
ভূমি অফিসের বারান্দায় দাড়িয়ে থাকা উপজেলার রতনপুর গ্রামের প্রাইমারি স্কুল শিক্ষিকা ফারজানা খাতুনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘মাঠের একটি জমি বিক্রি করে বাড়ি করার জন্য রাস্তার ধারে একটা জমি পেয়েছি। ওই জমি কিনতে চাচ্ছি, কিন্তু চার মাস ধরে আমার জমি বিক্রির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ তৈরি করতে পারছি না।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাদিম সারওয়ার এ বিষয়ে বলেন, ‘পদগুলো শূন্য আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আগে থেকে জানলেও আমি আবারও শূন্য পদগুলো পূরণের জন্য কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।’