আজ বিশ্ব ক্যানসার দিবস
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:৫৬
ঢাকা: সারা বিশ্বের মতো আজ ৪ ফেব্রুয়ারি দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব ক্যানসার দিবস-২০২০। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আই এ্যাম অ্যান্ড আই উইল’ অর্থাৎ ‘আমি আছি, আমি থাকবো, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে’।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার’র (আইএআরসি) এক পরিসংখ্যানের হিসেবে প্রতিবছর বাংলাদেশে এক লাখ ৫০ হাজার মানুষ নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এরমধ্যে ১ লাখ ৮ হাজারই মারা যান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাতীয়ভাবে ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ কৌশল ও সঠিক কর্ম-পরিকল্পনার অভাবে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন আক্রান্ত রোগীরা। এ কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর নতুন করে আক্রান্ত হওয়া রোগীদের জন্য জাতীয় ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ কৌশল, কর্ম-পরিকল্পনা ও জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যানসার নিবন্ধন চালু করা জরুরি।
২০০৫ সালে দেশে প্রথম হাসপাতালভিত্তিক ক্যানসার নিবন্ধন চালু হয়। যা থেকে ক্যানসারের ব্যাপ্তি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা গেলেও পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতার কারণে সঠিক তথ্য জানা এখনো সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য দেশের ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার নির্ণয় জরুরি।
এছাড়াই কোন ক্যানসারে কতজন আক্রান্ত হয়েছে সে সম্পর্কে সঠিক পরিসংখ্যান জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যানসার নিবন্ধন দরকার বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এখন পর্যন্ত সরকারের সেক্টর কর্মসূচিতে এই জনসংখ্যাভিত্তিক নিবন্ধন অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি। চলমান ৫ বছর মেয়াদি মাল্টি সেক্টোরাল এনসিডি কন্ট্রোল প্ল্যানে ২০২২ সালের মধ্যে ১৯টি পুরনো সরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালভিত্তিক নিবন্ধন চালু করার উদ্যোগ নেওয়ার পরেও তা থেমে গেছে।
ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে গাইডলাইন, যা হতে পারে সহায়
বাংলাদেশের বর্তমান ক্যানসার পরিস্থিতি উত্তরণে করণীয় সম্পর্কে জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিট হাসপাতালের এপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, ‘প্রাথমিক প্রতিরোধের ওপর জোর দিতে সরকার, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তথা যাদের কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে, তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে। সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে যার যার জায়গা থেকে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা যায়। আর এ জন্যই দরকার সুপরিকল্পিত কর্মসূচি গ্রহণ ও সফল বাস্তবায়ন।’
চিকিৎসকরা বলছেন, ক্যানসার নিয়ন্ত্রণের ৪টি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো প্রাথমিক প্রতিরোধ, সূচনায় ক্যানসার নির্ণয়, চিকিৎসা ও প্রশমন সেবা বা পেলিয়েটিভ চিকিৎসা। কিন্তু দেশে ক্যানসারের জন্য বরাদ্দের সিংহভাগ ব্যয় হচ্ছে অবকাঠামো ও অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামের পিছনে। ক্যানসার নির্ণয় ও স্ক্রিনিং খাতে বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। ফলে প্রাথমিক প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
বিশ্ব ক্যানসার দিবস-২০২০ উপলক্ষ্যে জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল আজ দিনব্যাপি নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. কাজী মুশতাক হোসেন জানান, সকালে শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু করা হবে। এছাড়াও আলোচনা সভা ও ক্যান্সার রোগী ও সারভাইভারদের অংশগ্রহণে ক্রীড়ানুষ্ঠানের আয়োজন করে দিবসটি পালন করা হবে।