Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বঙ্গবন্ধু হত্যার মাস্টারমাইন্ডদের বিচারের আওতায় আনার দাবি


৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২২:০৫

সংসদ ভবন থেকে: বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের মাস্টারমাইন্ডদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সরকারি দলের মন্ত্রী-এমপিরা। তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার হলেও নেপথ্যের মূল মাস্টারমাইন্ডদের এখনও বিচার হয়নি। তাদের বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা খুনিদের বিচার না করে পুরস্কৃত করেছে তাদেরও বিচার করতে হবে।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদের ৬ষ্ঠ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এ দাবি জানান। এদিন প্রথমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও পরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে ওই আলোচনায় অংশ নেন সরকারি দলের সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সরকারি দলের সৈয়দা জাকিয়া নূর, মোহাম্মদ এবাদুল করিম, আয়েশা ফেরদৌস, নাদিরা ইয়াসমীম জলি এবং বিরোধীদল জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম তালুকদার ও আহসান আদিলুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন এমপি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী, প্রাজ্ঞ ও জনকল্যাণকামী সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশ সব দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সামনে উন্নয়নের রোল মডেল। দেশে এখন আর কাঁচা রাস্তা দেখা যায় না। মানুষের ঘরে ঘরে এখন বিদ্যুতের আলো জ্বলছে। মুজিববর্ষে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পুনর্জাগরণী মন্ত্রে দীক্ষিত হবে। এ জন্য চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’

সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশ আর দরিদ্র্য ও ক্ষুধাপীড়িত দেশ নয়, সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধুর প্রতি অনেকের মান-অভিমান থাকতে পারে, কিন্তু বঙ্গমাতা ও শিশু রাসেলের কী অপরাধ ছিল? বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, আত্মস্বীকৃত কিছু খুনির রায় কার্যকর হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের মূল নায়করা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে, বিচার হয়নি। খুনিদের বিচার না করে যারা (জিয়া ও খালেদা জিয়া) পুরস্কৃত করেছে তারাই মাস্টারমাইন্ড। এদের বিচার করার এখনও সুযোগ রয়েছে। অবশ্যই মাস্টারমাইন্ডদের বিচার করতে হবে। আল্লাহ’র মাইর দুনিয়ার বাইর। দুর্নীতি করে খালেদা জিয়া এখন জেলে।’

বিজ্ঞাপন

বুয়েটে এক শিক্ষার্থীকে হত্যা, নারীর প্রতি সহিংসতা এসব মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় কেন হচ্ছে- তা গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সাবেক আইনমন্ত্রী আরও বলেন, বিচারকদের সঙ্কটের কারণে মামলা জট কমছে না। বিচার বিভাগের জন্য বরাদ্দও দ্বিগুণ করতে হবে। অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে সরকারি করা উচিত। ন্যায় বিচার মানুষের কৃপা নয়, এটা জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। রাষ্ট্রকে তা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোচ্চ আদালতে ৩৫ লাখ মামলা আছে, এই এক হাজার ৭শ’ বিচারক দিয়ে আগামী ২০ বছরেও মামলাগুলো নিষ্পন্ন করা সম্ভব না। একটা মামলা ১০ বছর, ২০ বছর চলবে কেন? এটার সুরাহা করা দরকার। আর অনেক সচিব-আমলারা এখনও জয় বাংলা বলতে ভয় ও লজ্জা পান। এটা হতে পারে না। রাষ্ট্রপতি থেকে পিওন পর্যন্ত সবার বক্তব্যে শেষ জয় বাংলা বলতে হবে, এটা জাতীয় স্লোগান হওয়া উচিত।’

এ সময় স্পিকারের আসনে থাকা ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, ‘সংসদে একটি সর্বসম্মত প্রস্তাব আসা উচিত, যাতে অন্তত জাতীয় সংসদের সব সদস্য বক্তব্যের শেষে জয় বাংলা বলেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।’ সবাই জয় বাংলা বলবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর একটি প্রজন্মকে মিথ্যা ইতিহাস জানানো হয়েছে। পাকিস্তান থেকে এক সময় যেসব কথা বলা হয়েছে, আজও বিএনপি-জামায়াত-রাজাকাররা একই কথা বলছে। বঙ্গবন্ধুর প্যারালালে জিয়াউর রহমানকে আনার চেষ্টা চলেছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের বিতর্কিত ভূমিকা এবং আদৌ তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন কি না- সে ব্যাপারে প্রশ্ন উঠেছে। বিএনপি-জামায়াত জোট রেলকে ধ্বংস করেছে দাবি করে তিনি বলেন, রেলওয়েতে ১৯৭৩-৭৪ সালে জনবল ছিল ৭০ হাজারের মতো। সেই জনবল কমে এখন ২৭ হাজারে পৌঁছেছে। বিএনপি ক্ষমতায় এসে এক দিনে ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করে। এই অবস্থায় সরকার সড়ক পথের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে রেলপথের ওপর গুরুত্ব বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে।’

জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘অনেকে বলেন এরশাদ ছিলেন স্বৈরাচার! স্বৈরাচার হলে আওয়ামী-বিএনপি আন্দোলন-হরতাল করলেন কীভাবে? জেলে থেকে পাঁচটি আসনে এরশাদ দুবার নির্বাচিত হয়েছেন। পৃথিবীর কোনো ইতিহাসে এমন নজির নেই। স্বৈরাচার হলে এটা কীভাবে সম্ভব হলো? আওয়ামী লীগই বিএনপি-জামায়াতকে আন্দোলন শিখিয়েছে। তারা শিখে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে মানুষ হত্যা করেছে। ধর্ষণ বেড়েছে। শাস্তি বিলম্বিত হয়, তাই ধর্ষকদের শাস্তি হিসেবে ইনজেকশন দিয়ে যৌন ক্ষমতা হ্রাস করা যেতে পারে। দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তবে ঘুষ ছাড়া সরকারি অফিসগুলোতে কোনো কিছু চলে না, এটা বন্ধ করতে হবে।’

দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে সৈয়দা জাকিয়া নূর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু ইদানিং ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই যাচ্ছে। এসব পৈশাচিক নির্যাতন বন্ধে বিচারিক শাস্তির মাত্রা বাড়াতে হবে। তবে কোনো সভ্য দেশ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সমর্থন করে না। অবশ্যই অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

টপ নিউজ বঙ্গবন্ধুর খুনি বিচার মাস্টারমাইন্ড

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর