চায়ের স্টলে অ্যান্টিবায়োটিক, মুদি দোকানদারই ‘ডাক্তার’
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৭:৫২
চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গা শহরসহ গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন মুদি ও চায়ের দোকানে মিলছে অ্যান্টিবায়োটিকসহ নানা রোগের ওষুধ! মুদি ও চায়ের দোকানদাররা বিভিন্ন মালামাল বিক্রির পাশাপাশি চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই পুরোদমে বিক্রি করছেন এসব ওষুধ। ওষুধ বিক্রির সরকারি বিধি-বিধান থাকলেও প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা শহরসহ একাধিক মুদি ও চায়ের দোকানে অহরহ মিলছে প্যারাসিটামল। এ ছাড়াও গ্যাস্টিক, ব্যথানাশক ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিকও পাওয়া যায় এসব দোকানে। এভাবে চলতে থাকলে জনজীবন মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্যবিদদের।
সরেজমিনে জানা যায়, যেকোনো বয়সের মানুষের জ্বর, সর্দি, কাশি, মাথাব্যথা, শরীর ও বুক ব্যথা, এসব রোগের জন্য এখন আর চিকিৎসকের কাছে যেতে হয় না। রোগের বর্ণনা দিলে মুদি ও চায়ের দোকানদার ওষুধ দিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে বলে দেয় খাওয়ার নিয়মও। এখানে ওষুধ নিতে কোনো টেস্টেরও প্রয়োজন হয় না, তাই গ্রামের অসচেতন ও হতদরিদ্র মানুষেরা বিভিন্ন রোগের জন্য এখান থেকেই ওষুধ কিনছেন।
এমনকি শিশুদের ওষুধও দেওয়া হচ্ছে এসব দোকান থেকে। এমনকি এসব ওষুধের মেয়াদ আছে কিনা, তাও না দেখেই বিক্রি করা হয়। ফলে মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবন যেকোনো সময় পড়তে পারে ভয়ঙ্কর ঝুঁকির মুখে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মুদি ও চায়ের দোকানদার বলেন, ‘আমরা জটিল কোনো রোগের ওষুধ বিক্রি করি না। গ্যাস, মাথাব্যথা, জ্বর, কাশি- এ ধরনের রোগের ওষুধ বিক্রি করি। এতে মানুষের উপকারই হয়।’ মুদি ও চায়ের দোকানে ওষুধ বিক্রির কোনো প্রকার অনুমতি আছে কি না, জানতে চাইলে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
চুয়াডাঙ্গার ড্রাগ সুপার সুকর্ণ আহমেদ বলেন, ‘লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ বিক্রি সম্পূর্ণ অবৈধ। লাইসেন্সকৃত দোকানেও প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রি করা যাবে না। ফার্মেসি ছাড়াও অন্য দোকানে ওষুধ বিক্রির বিষয়ে আমরা কিছু তালিকা হাতে পেয়েছি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালালেও আমাদের যাওয়ার খবর পেয়ে যাচ্ছে তারা। তবে আমরা দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান বলেন, ‘মুদি ও চায়ের দোকানিরা কোনোভাবেই ওষুধ বিক্রি করতে পারেন না। এটি দণ্ডনীয় অপরাধ। এতে জনগোষ্ঠী মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে।’ প্রশাসনকে জানিয়ে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।