‘চীনারা আরও ২ মাস ছুটিতে থাকলেও পদ্মাসেতুতে প্রভাব পড়বে না’
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৫:১৮
ঢাকা: পদ্মাসেতু প্রকল্পের চীনা শ্রমিকদের যারা ছুটিতে দেশে রয়েছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে তাদের ছুটি আরও দুই মাসের বেশি বাড়ানোর প্রয়োজন হলে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজে প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, চীনের নববর্ষ উপলক্ষে পদ্মাসেতু প্রকল্পের ৯৮০ জন চীনা শ্রমিকের প্রায় তিনশ জন ছুটিতে আছেন। তাদের ছুটির মেয়াদ বাড়াতে না হলে আগামী দুই মাসের মধ্যে পদ্মাসেতুর কাজের অগ্রগতিতে কোনো সংকট দেখা দেবে না। তবে দুই মাসেরও বেশি সময় তাদের ছুটিতে রাখতে হলে তখন সেতুর কাজে প্রভাব পড়তে পারে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভা শেসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। মন্ত্রণালয়ের অধীন দফতর ও প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি পর্যালাচনা ও নাগরিকদের সেবা দেওয়ার বিষয়গুলো সভায় আলোচনা করা হয়।
সভা শেষে সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, পদ্মাসেতু প্রকল্পে ৯৮০ জন চীনা নাগরিক কাজ করেন। এর মধ্যে নববর্ষ উপলক্ষে চীনে ছুটিতে গেছেন ৩৩২ জন। তাদের মধ্যে ৩৩ জন ফিরে এলেও আট জনকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ‘কোয়ারেনটাইন’ জোন থেকে বের করে রাখা হয়েছে। বাকিদের এখনো ‘কোয়ারেনটাইন’ ইউনিটে রাখা হয়েছে। বাকিরা এখনো চীনে আছেন। আগামী দুই মাসের মধ্যে চীনের অচলাবস্থার (করোনাভাইরাস পরিস্থিতি) অবসান ঘটলে পদ্মাসেতু নির্মাণে কোনো অসুবিধা হবে না। কাজ চলতে থাকবে। তবে এর মধে ছুটি আরও বাড়াতে হলে কাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
করোনাভাইরাস নিয়ে শঙ্কার কারণে চীনা শ্রমিকদের দুই মাস পরও বাংলাদেশে নিয়ে আসা সম্ভব না হলে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা রয়েছে কি না— এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, যাদের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে আমাদের, তাদের সঙ্গে বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে কোনো কথা হয়নি। তবে মাস দুয়েকের মধ্যে পদ্মাসেতুতে কোনো প্রভাব পড়বে না। আমাদের ২৩টি স্প্যান বসেছে, আগামী ১০ তারিখে (১০ ফেব্রুয়ারি) ২৪তম স্প্যানটি বসবে। কাজেই তাদের অনুপস্থিতি তেমন কোনো সমস্যা হবে না। আড়াই থেকে তিন মাস পর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মার্চে এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন
আগামী মাস, অর্থাৎ মার্চেই ঢাকা-মাওয়া রুটে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ শেষ, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ। পদ্মার ওপার থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত সড়ক উদ্বোধনও হয়েছে। আশা করছি আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী সশরীরে উপস্থিত হয়ে এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রকল্পটির সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সময় দিলেই এক্সপ্রেসওয়েটি উদ্বোধন করা হবে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির প্রভাব পড়বে না অন্য প্রকল্পগুলোতেও
উড়াল সেতু প্রকল্পে এখন আর ফান্ড নিয়ে সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের প্রথম ফেজের অগ্রগতি ৫৫ শতাংশ। এই প্রকল্পে ৩৮ জন চীনা নাগরিকের মধ্যে ছুটিতে আছেন ১৮ জন। তবে তাদের জন্য কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।
বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পে ৭২ জন চীনার মধ্যে একজন ছুটিতে রয়েছে। এখানে সেতু বিভাগের অংশে অগ্রগতি ২০ শতাংশ বলে জানান মন্ত্রী।
অন্যদিকে, ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (মেট্রোরেল) প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৪২ শতাংশ জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশে ৬৮ শতাংশ এবং আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের কাজ ৩৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। এই প্রকল্পে চীনা নাগরিক আছেন ৫৮ জন। এর মধ্যে ৩১ জন চীনে ছুটিতে যাওয়ার পর একজন ফেরত এসেছেন। তাকে কোয়ারেনটাইন ইউনিটে রাখা হয়েছে। চীনের পরিস্থিতিতে এই প্রকল্পেও কোনো প্রভাব পড়বে না।