গৎবাঁধা অভিযোগ ছেড়ে বাস্তবতা মেনে নিন— বিএনপিকে তথ্যমন্ত্রী
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২০:৩৩
ঢাকা: বিএনপিকে গৎবাঁধা অভিযোগ ছেড়ে বাস্তবতা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধারীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বেসরকারি সংস্থা ট্রমা লিংক’র ৫ম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মন্ত্রী। এ সময় ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন বাতিলের বিএনপির দাবির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমি বলব এই গৎবাঁধা কথাগুলো বাদ দিয়ে বাস্তবকে মেনে নেওয়ার জন্য।’
সেইসঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের কিছু নেতাও নির্বাচন নিয়ে ফতোয়া দেওয়া শুরু করেছেন, যা যথার্থ নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ইভিএম-এ যেভাবে ভোট হয়েছে, এর চেয়ে স্বচ্ছ ভালো ভোট বাংলাদেশের ইতিহাসে অতীতে কখনো হয়নি। ইভিএম প্রত্যেক দলের জন্য পোলিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এখানে কারও ফিঙ্গার প্রিন্ট না মিললে ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
বিএনপি লজ্জা ঢাকার চেষ্টা করছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ২৯ শতাংশ আর উত্তরে ২৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। সেই ভোটের মধ্যে আমাদের প্রার্থীরা দ্বিগুণ ভোটে জয়লাভ করেছে। এখন এই লজ্জা ঢাকার জন্য তাদের নানা কথা বলতে হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা সে কথাগুলোই বলছেন।’
বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাকানোর উপদেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে ভোট দেওয়ার যোগ্য মানুষদের মধ্যে ৬০ শতাংশ ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়, আর তার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোট পড়ে। অর্থাৎ মোট ভোট দেওয়ার যোগ্য মানুষদের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ভোট পড়ে।’
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার কারাবাসের দুবছর হওয়ায় তার মুক্তির দাবিতে বিএনপির ডাকা সমাবেশ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খালেদা জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। আদালত ছাড়া তাকে মুক্তি দেওয়ার এখতিয়ার সরকারের নাই। তারা বারবার সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে আইন ও আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছেন। সমাবেশ তারা অতীতেও করেছে। আমরা দেখেছি, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তারা সমাবেশ করতে গিয়ে হাঙ্গামা করেছে, মানুষের ওপর আক্রমণ করেছে, গাড়ি ভাঙচুর করেছে।’
সমাবেশের অনুমতি মিলবে কি না?- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমস্ত বিচার-বিশ্লেষণ করে অনুমতি দেবে কি দেবে না সিদ্ধান্ত নেবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখবে তাদের উদ্দেশ্যটা কি; সমাবেশ করা, না কি সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা।’
এর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের জরুরি চিকিৎসাদাতা বেসরকারি সংস্থা ট্রমা লিংক’র ৫ম বর্ষপূর্তিতে সংস্থার চেয়ারম্যান মৃদুল চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক দুর্ঘটনা রোধকল্পে মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্কুলে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে শেখানো প্রয়োজন, সেটা সারাজীবন মনে থাকবে।’
ড. হাছান আরও বলেন, ‘বিআরটিএ-সার্টিফাইড বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যদি ড্রাইভিং শিক্ষা দেয়, তাহলে আমাদের দেশে প্রশিক্ষিত ড্রাইভারের সংখ্যা বাড়বে। অন্তত যে পরিমাণ গাড়ি আছে সেই পরিমাণ ড্রাইভার আমরা পাব। যে পরিমাণ গাড়ি আছে তার চেয়ে বেশি ড্রাইভার দরকার। কারণ একজন ড্রাইভার প্রতিদিন গাড়ি চালাতে পারে না।’
এ জন্য তিনি বিআরটিএ-কে সারাদেশে আরও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলার আহ্বান জানান।