Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বন্দুকযুদ্ধে নিহত ২ যুবকের পরিচয় মিলেছে


৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৬:৩৪

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা : বাড্ডার জহুরুল হক সিটি  এলাকায় গুলিতে নিহত দুই যুবকের পরিচয় মিলেছে। নিহত দুইজন হলেন আল-আমিন ও সাদ্দাম। ডিবি পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, অভিযান চলাকালে তারা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। তারা বনানীর জনশক্তি ব্যবসায়ী সিদ্দিক মুন্সী হত্যায় জড়িত।

তবে পরিবার জানিয়েছে, তারা কেউই ওই খুনে জড়িত নয়। ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তাদের খোঁজ মিলছিল না।

শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে দুই যুবকের স্বজনেরা লাশ শনাক্ত করেন।

সাদ্দাম হোসেনের বাবা হাসমত হোসেন সারাবাংলাকে জানান, তাদের বাসা রামপুরা পূর্ব ঊলন ১৭৬/৩ জমিদার লেনে। স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে তার ছেলে গাজীপুরে থাকত। তার মোমবাতি ও কয়েলের কারখানা আছে।

গত ২৪ তারিখে তার ছেলে সপরিবারে স্ত্রীর বড় বোনের বাসা কুমিল্লার সোয়াগাছিয়ায় বেড়াতে যায়। সেইদিনই সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন স্থানে খোঁজ খবর নিয়েও তাকে পায়নি পরিবার।

এদিকে আল-আমিনের স্ত্রী খাদিজা আক্তার জানান, ছয় বছর আগে আল-আমিনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের তিনমাসের একটা ছেলে সন্তান রয়েছে। তারা দক্ষিণখানের আঁটিবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকত।

সাদ্দামের সঙ্গে আল-আমিনের আগে থেকেই পরিচয় ছিল। রামপুরায় থাকাকালে আল-আমিনের সঙ্গে সাদ্দামের পরিচয় হয়। সাদ্দাম রামপুরা থেকে গাজীপুরে চলে যায়, আল-আমিন দক্ষিণখানে বাসা ভাড়া নেন। দুইজন দুই এলাকায় থাকায় তাদের মধ্যে তেমন যোগাযোগ হতো না।

খাদিজা জানান,  ২ ডিসেম্বর নামাজ পড়ে স্থানীয় একটি হোটেলে খাবার খেতে যায় আল-আমিন। পরে লোক-মারফত জানতে পারেন কে বা কারা তার স্বামীকে ধরে নিয়ে গেছে।

তার স্বামী কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত কি না জানতে চাইলে খাদিজা সারাবাংলাকে বলেন, তার সঙ্গে আমার ছয় বছরের সংসার। বিয়ের পরে তার নামে কোনো মামলা কিংবা জিডি হয়নি। বিয়ের আগে কারো সঙ্গে কোনো ঝামেলা ছিল কি না জানি না। এরকম কোনোকিছু আমার জানা নেই।

শুক্রবার ভোরে ওই দুই যুবককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে বাড্ডা থানা পুলিশ। তাদের ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

ডিবি সূত্র জানিয়েছে, বনানীতে রিক্রুটিং এজেন্ট  সিদ্দিক হত্যায় ছয়জন অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে এই দুইজনও ছিলেন। সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে তাদের সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।

হত্যার নেতৃত্বে ছিলেন হেলাল উদ্দিন। প্রবাসী এক ছাত্রনেতার নির্দেশে হেলাল এই কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দেয়। আফতানগরে নিহত দুই যুবক হেলালের সহযোগী।

বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল কাদের জানান, বাড্ডা আফতাব নগর জহুরুল সিটি এলাকায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অজ্ঞাত পরিচয় দুই যুবক পড়েছিল। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়।

রাজধানীর গুলশানের কালাচাঁদপুর থেকে হেলাল উদ্দিনকে ৫ ডিসেম্বর রাতে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তার কাছ থেকে পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্রও জব্দ করে পুলিশ। পরের দিন তাকে রিমান্ডে পাঠানো হয়।

হেলালের দেওয়া তথ্যমতে বৃহস্পতিবার রাতে আফতাবনগরে অভিযানে যায় ডিবি পুলিশ। এ সময় অভিযানস্থলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে সেখানে দুইজন নিহত হয়। বাকিরা পালিয়ে যায়। পরে থানা পুলিশ খবর পেয়ে গুলিবিদ্ধ ওই দুইজনকে হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

গত ১৪ নভেম্বর রাতে এমএস মুন্সী ওভারসিজ নামে রিক্রুটিং এজেন্সির কর্ণধার সিদ্দিক হোসেন মুন্সীকে (৫০) তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে গুলি করা হয়। ওই সময় প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মকর্তাও গুলিবিদ্ধ হন।

ঘটনার পরদিন নিহতের স্ত্রী জোৎস্না বেগম অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে বনানী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পুলিশের ভাষ্য, হেলাল ভাড়াটে খুনি। তার বন্ধু ইউরোপে পালিয়ে থাকা ছাত্রদলের একজনের নির্দেশেই ব্যবসায়ী সিদ্দিককে হত্যা করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হেলাল হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

সারাবাংলা/এসএস/একে

 

 


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার শাজাহান খান
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:৪৫

সম্পর্কিত খবর