Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এক নজরে উহানফেরতদের জন্য নেওয়া ‘কোয়ারান্টাইন’ ব্যবস্থাপনা


৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৪৬

ঢাকা: চীনের উহান থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে গত ১ ফেব্রুয়ারি সেখান থেকে ফিরিয়ে আনা হয় ৩১২ বাংলাদেশিকে। প্রমাণ তাপমাত্রার চাইতে একটু বেশি তাপমাত্রা পাওয়ায় ৭জনকে নেওয়া হয় কুর্মিটোলা হাসপাতালে ও একজনকে পরিবারের সদস্যদেরসহ নেওয়া হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বাকিদের ‘কোয়ারান্টাইন’—এর জন্য রাজধানীর আশকোনাতে অবস্থিত হজ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাদের মধ্যে কেউই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নয় বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) আইইডিসিআরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। এ সময় আশকোনা হজ ক্যাম্পে বাংলাদেশিদের ‘কোয়ারান্টাইন’ ব্যবস্থাপনা নিয়ে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চীনের উহানফেরত বাংলাদেশিরা বর্তমানে আশকোনা হজ ক্যাম্পের ৭টি ডরমিটরিতে অবস্থান করছেন। এখানে নিয়মিতভাবে চার বেলা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিদিন দুই বেলায় মাস্ক সরবরাহ করা হয়। কোয়ারান্টাইন কক্ষগুলো ও তার চারপাশের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করছেন সেনা কর্তৃপক্ষ।

এছাড়াও নিয়মিতভাবে কোয়ারনান্টাইনকৃত যাত্রীদের মতামত ও প্রতিক্রিয়া নিয়ে সে অনুযায়ী সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের চিকিৎসাসেবা ও নার্সিং সেবা কার্যক্রমকে পুরোপুরি সমর্থন দিচ্ছে সেনা কর্তৃপক্ষের মেডিক্যাল সার্ভিস। ক্যাম্পে সকল ওষুধ সরবরাহ করছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। একইসঙ্গে জরুরি প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে ঔষধ কেনা হচ্ছে। যাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবা ছাড়াও তাদের সকল রোগ তাত্ত্বিক তথ্য সংগ্রহ করছে আইইডিসিআর।

এছাড়াও কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজ করছেন সামরিক বাহিনীর মিলিটারি পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রে সবার খাবার, শিশু খাদ্য, শিশুদের ডায়পার ও অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এই পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অফিস। এছাড়াও ক্যাম্পের স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য মশক নিধনের কাজ করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের চারপাশের নিরাপত্তা দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথা বাংলাদেশ পুলিশ। এছাড়াও চীনে অবস্থিত বাংলাদেশের নাগরিকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, বর্তমানে চীনের উহানফেরত ৩১২ জনের মধ্যে ২৯৮ জন আছেন আশকোনায়। এছাড়াও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এখন উহানফেরত ১১ জন আছেন। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আছেন ৩ জন।

তিনি বলেন, যাদের আশকোনা হজ ক্যাম্পে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল, তাদের মধ্যে এক শিশু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় পরিবারের সদস্যদেরসহ তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পাঠানো হয়েছে। এখানে এর আগে আরও তিনটি পরিবারকে রাখা হয়েছিল। তবে সেখানে কেউই অসুস্থ নন। যে শিশুটির জ্বর এসেছে তার ক্ষেত্রেও আমরা করোনাভাইরাস বলে সন্দেহ করছি না। যেহেতু আমরা অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করছি সেজন্য বেটার ট্রিটমেন্টের জন্য তাকে আমরা সেখানে পাঠিয়েছি। ওই শিশুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার ফল এখনও পাওয়া যায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চীনের উহান থেকে ফেরত বাংলাদেশি যাত্রীদের অভিভাবকদের যেকোনো জিজ্ঞাসা ও প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল তিনটায় আইইডিসিআর-এ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এখন থেকে নিয়মিতভাবে এ কার্যক্রম চলবে বলেও জানানো হয়। এছাড়াও যেকোনো প্রয়োজনে আইইডিসিআর-এর হটলাইন নম্বর এ যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়। নম্বরগুলো হলো ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী, আইইইডিসিআর এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীরসহ অন্যান্যরা।

'কোয়ারান্টাইন' ব্যবস্থাপনা উহানফেরত

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর