পাকিস্তানি শাসকদের দেওয়া ডিগ্রি বাতিলের দাবিতে ঢাবিতে অবস্থান
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২৩:০২
ঢাবি: পাকিস্তান আমলের তিন শাসক খাজা নাজিমুদ্দিন, ইস্কান্দার মির্জা ও মুহাম্মদ আইয়ুব খানকে দেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের পর বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় রাজু ভাস্কর্যের সামনে ‘বিতর্কিত ব্যক্তিদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রত্যাহার আন্দোলন পরিষদ’ অবস্থান কর্মসূচি করে।
অবস্থান কর্মসূচিতে লিখিত বক্তব্যে বক্তারা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের প্রাচীন এবং অন্যতম প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি এ পর্যন্ত মোট ৫২ জনকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে। যাদের ডিগ্রি দেওয়া হয়েছে ধরে নিতে হবে যে তারা রাষ্ট্র ও সমাজে অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি।’
ডিগ্রি বাতিলের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলা হয়, ভাষা আন্দোলনের ৪৮ এবং ৫২ এর দুইপর্বে খাজা নাজিমুদ্দিনের ভূমিকা ছিল বাংলার বিরুদ্ধে এবং বাঙালিবিরোধী। যখন বাংলাকে পূর্ব বাংলার সরকারি ভাষা, আদালতের ভাষা এবং শিক্ষার মাধ্যম করার প্রস্তাব পেশ করা হয় তখনি আইনসভার সদস্যরা সমর্থনের পর তা গৃহীত হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার যে প্রস্তাব এবং চুক্তি হয়েছিল তা নাজিমুদ্দিন উত্থাপন করেননি। সংগ্রাম পরিষদ এ ব্যাপারে তার কাছে কৈফিয়ত দাবি করলে তিনি বলেছিলেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এভাবে তিনি বারবার বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন বাঙালিদের সাথে।
ইস্কান্দার মির্জার ডিগ্রি বাতিলের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলা হয়, ইস্কান্দার মির্জার ছিলেন অগণতান্ত্রিক, সংবিধানবিরোধী এবং স্বার্থনূকুল। তিনি কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারকে বরখাস্ত করেন। কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের সকল রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করেন। সামরিক আইন জারি করেন। তিনি সংবিধান বাতিল করলেও সংবিধান তাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে সংবিধান বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোনো ক্ষমতা দেয়নি।
আইয়ুব খানের বিষয়ে বলা হয়, আইয়ুব খান ছিলেন উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও ক্ষমতালিপ্সু। তিনি প্রথম বিডি মেম্বারদের মাধ্যমে হ্যাঁ/না পদ্ধতির প্রয়োগে রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ছাড়াই ১৯৬০ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ছাত্র আন্দোলন দমনে তিনি প্রথম এনএসএফ নামের পেটুয়া বাহিনী তৈরি করেন।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হারুনুর রশিদ, সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান নমিতা মন্ডল, ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত আনসারী এবং সংস্কৃতি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর প্রমথ মিস্ত্রিসহ প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।