গ্রামবাংলার চিরায়ত নাচ-গানে উৎসবমুখর শিল্পকলা
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২০:৪৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: গ্রামবাংলার আবহমান সংস্কৃতিকে নগরজীবনে অভ্যস্ত মানুষের কাছে তুলে ধরতে চট্টগ্রাম নগরীতে শুরু হয়েছে দুদিনের লোকসংস্কৃতি উৎসব। ‘অস্তিত্বের সন্ধানে, শিকড়ের টানে’ স্লোগান নিয়ে সমাজ সমীক্ষা সংঘ সপ্তমবারের মতো এই উৎসবের আয়োজন করে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমির অনিরুদ্ধ মুক্তমঞ্চে লোকসংস্কৃতি উৎসবের উদ্বোধন হয়। লোকনৃত্য, চট্টগ্রামের চিরায়ত আঞ্চলিক গান, মাইজভাণ্ডারি গানসহ নানা পরিবেশনায় উৎসবমুখর হয়ে ওঠে শিল্পকলা প্রাঙ্গণ।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, আমাদের লোকসংস্কৃতি আজ হুমকির মুখে। বিভিন্নভাবে বিভিন্ন ধরনের বাধার মুখে পড়ে এই সংস্কৃতি বিলীন হতে বসেছে। অথচ এটাই আমাদের শিকড়। এই সংস্কৃতিকে আমাদের রক্ষা করতে হবে, কোনোভাবে এর ব্যত্যয় হলে আমাদের অস্তিত্ব চরম সংকটের মুখে পড়বে। নতুন প্রজন্মকে নিজের কৃষ্টি-সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সম্বন্ধে জানতে হবে এবং জাতিগত বিকাশের পথ খুঁজে বের করতে হবে।
অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক সমাজ গড়ার জন্য আপসহীন থেকে লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছেন এই শিক্ষাবিদ।
সপ্তম লোকসংস্কৃতি উৎসব প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু, সমাজ সমীক্ষা সংঘের সভাপতি কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু, নির্বাহী পরিচালক শিহাব চৌধুরী বিপ্লব, উৎসব প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক দেবাশীষ রায় ও সদস্য সচিব সাইফুদ্দিন আহমেদ মিনহাজ, সংগঠনের সদস্য চিন্ময় দাশ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর এফ কবির আহমেদ মানিক ও এইচ এম সোহেল বক্তব্য রাখেন।
এর আগে ওডিসি অ্যান্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট সংগঠনের শিল্পীদের নৃত্যর মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা হয়। আলোচনা সভা শেষে প্রমা অবন্তীর পরিচালনায় লোকনৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
এছাড়া প্রথমদিনের আয়োজনে আরও আছে জয় সেন হিরো ও ববি মনির পরিবেশনায় চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান, সৈয়দ মানিক ও তার দলের পরিবেশনায় মাইজভান্ডারী গান, কুষ্টিয়ার আরশিনগর সঙ্গীত একাডেমির পরিবেশনায় বাউল গান। এর আগে সকালে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন শনিবার বিকেলে হঁলা, বান্দা, ভাইট্টালি, হাইল্ল্যাগীতি, মুরারকূইল্যা, হালদা ফাডাসহ গ্রামবাংলার বিভিন্ন গান পরিবেশন করা হবে। এছাড়া হাছন রাজা, শাহ আব্দুল করিম ও রাধারমণের গান, আদিবাসী নৃত্যও থাকবে।