Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ব্যাংককে শপিং সেন্টারে যেভাবে হামলা চালায় বন্দুকধারী সেনা সদস্য


৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১১:৩০

ঢাকা: থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের উত্তর-পূর্বে নাখন রাতচাসিমা শহর, যা কোরাট নামে পরিচিত; সেখানে এক বৌদ্ধ মন্দির এবং এক শপিং সেন্টারে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ২০ জনকে হত্যাকারী ব্যক্তি নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন।

ওই হামলায় প্রায় অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে, জাকরাফান্থ থোম্মা নামে সামরিক বাহিনীর ওই জুনিয়র অফিসার প্রথমে তার কমান্ডিং অফিসারের ওপর হামলা চালিয়ে সামরিক ক্যাম্প থেকে বন্দুক ও বিস্ফোরক চুরি করে। এরপর সেনা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে গুলি চালাতে শুরু করে ওই ব্যক্তি। যদিও তার হামলার উদ্দেশ্য জানা যায়নি।

রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে থাই জনস্বাস্থ্য মন্ত্রী আনুতিন চারনভিরাকুল ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে শপিং সেন্টারের ভেতরে অ্যাকশন চালানোর জন্য দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। রোববার সকালেও অনেককে উদ্ধার করা হয় শপিং সেন্টার থেকে।

শপিং সেন্টারে রাতভর যা হলো

ভোররাত নাগাদ শপিং সেন্টারে হামলাকারীকে চারদিক থেকে নিরাপত্তা বাহিনী তাকে ঘিরে ফেলে বলে জানা যায়। রাতভর সেখানে থেমে থেমে গুলির আওয়াজ শোনা যায়। এদিকে শপিং সেন্টারের ভেতরে যারা আটকে পড়েছেন, বাইরে তাদের উৎকণ্ঠিত স্বজনেরা রাতভর অপেক্ষা করেছেন।

ওই ব্যক্তির খোঁজে শপিং সেন্টারে তল্লাশি চালানোর সময় নিরাপত্তা বাহিনী শত শত মানুষকে উদ্ধার করে।

এদিকে স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা থেকে কর্তৃপক্ষ টার্মিনাল টোয়েন্টিওয়ান শপিং সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে।

ভবনের ভেতরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলাকারীর খোঁজে তল্লাশি চালায় এবং সেই সঙ্গে শপিং সেন্টারে আটকে পড়া নাগরিকদের বের করে আনা হয়।

বিজ্ঞাপন

শপিং সেন্টারে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের পর বেরিয়ে আসছেন আটকে পড়া মানুষেরা। শপিং সেন্টারের সামনে আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বহু সংখ্যক অ্যাম্বুলেন্স আনা হয়েছে।

ভোররাত পর্যন্তই সেখান থেকে থেমে থেমে বন্দুকের গুলির আওয়াজ পাওয়া গেছে।

থাই গণমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে, গোলাগুলিতে একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছেন। কিন্তু দেশটির কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে খবরটি কেউ নিশ্চিত করেননি।

রোববার স্থানীয় সময় সকাল পাঁচটার পরে নতুন করে গোলাগুলি শুরু হলে সেখানে বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।

ভবনটিতে এখনো কত মানুষ আটকে রয়েছেন তা জানা যায়নি।

সন্দেহভাজন হামলাকারীর ছবি প্রকাশ করেছে থাই পুলিশ

হামলাকারী ব্যক্তি কয়েকজনকে জিম্মি করেছে বলে জানাচ্ছে দেশটির একটি গণমাধ্যম, তবে এ খবরটিও নিশ্চিত করেননি কর্মকর্তারা।

এদিকে, দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বিবিসি থাই সার্ভিসকে জানিয়েছেন, ৩২ বছর বয়সী হামলাকারীর মাকে ওই শপিং সেন্টারের সামনে নিয়ে আসা হয়। যেন তিনি ছেলেকে নিরস্ত্র করতে সাহায্য করতে পারেন।

 

উদ্ধার হওয়া মানুষের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা

শপিং সেন্টার থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন, এমন এক ব্যক্তি বিবিসিকে জানিয়েছেন, তিনি চারতলার একটি দোকানের সামনে ছিলেন যখন হামলা শুরু হয়। এরপর তিনি এবং আরেক ব্যক্তি দৌড়ে একটি বাথরুমে লুকিয়ে পড়েন। প্রায় তিন ঘণ্টা সেখানে থেকে পরে আস্তে আস্তে তিনি দোতলায় নামতে সমর্থ হন। দোতলায় নেমে একটি রেস্তোরাঁয় খাবার টেবিলের নিচে লুকিয়ে ছিলেন কয়েক ঘণ্টা।

বিজ্ঞাপন

থাই জনস্বাস্থ্য মন্ত্রী আনুতিন চারনভিরাকুল নিশ্চিত করেছেন, ২০ জনের মধ্যে ১৬ জন শপিং সেন্টারেই মারা গেছেন, অপর চারজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান তারা।

এখন পর্যন্ত ৩১জন মানুষ আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, এদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন। নিহত এবং আহত মানুষের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যেভাবে ঘটনার শুরু

স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সুয়াথাম ফিথাক সেনা ক্যাম্পে ঘটনার সূত্রপাত। সেখানে সন্দেহভাজন হামলাকারী তার কমান্ডিং অফিসারকে হত্যা করে।

দ্য পোস্ট জানিয়েছে, কর্নেল আনানথারোটের শাশুড়ি এবং আরেকজন সৈন্যও সেখানে নিহত হন।

এরপর হামলাকারী সামরিক ক্যাম্প থেকে বন্দুক ও বিস্ফোরক চুরি করে এবং একটি হামভি ধরনের গাড়িতে করে সেনা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে যায়।

শপিং সেন্টারে গিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি শুরুর আগে আরো কয়েক জায়গায় গুলি ছোড়ে ওই ব্যক্তি।

স্থানীয় গণমাধ্যমের ফুটেজে দেখা যায় গাড়ি থেকে নেমে পলায়নরত লোকেদের ওপরও গুলি ছোড়ে ঐ ব্যক্তি।

এরইমধ্যে পরিচিতিসহ ছবি দিয়ে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ হিসেবে সামাজিক মাধ্যমে পোষ্টার তৈরি করেছে থাই পুলিশ।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচা পুরো ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন বলে তার মুখপাত্র জানিয়েছেন।

দেশটির জনস্বাস্থ্যমন্ত্রী আহতদের রক্ত দেয়ার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।

হামলাকারী সামাজিক মাধ্যমে যা লিখেছে?

হামলা চালানোর সময় ঐ ব্যক্তি তার সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিতে থাকে।

এর মধ্যে ফেসবুকে এক পোস্টে সে প্রশ্ন রাখে, তার আত্মসমর্পণ করা উচিত কি না?

এর আগে একটি পিস্তল এবং তিন সেট গুলির ছবি পোস্ট করে লিখেছিল, ‘এক্সাইটেড হওয়ার এটিই সময়’ এবং ‘মৃত্যুকে কেউ এড়াতে পারে না।’

তবে ফেসবুক এখন তার অ্যাকাউন্টটি সরিয়ে দিয়েছে।

এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ‘হামলায় নিহত, আহত এবং তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা। এ ধরনের ভয়াবহ হামলা চালাতে পারে এমন কারো জায়গা ফেসবুকে হবে না, আর এমন কাজের জন্য তাকে কেউ বাহবা দেবে বা সমর্থন দেবে সেটাও ফেসবুক অ্যালাও করবে না।’ খবর: বিবিসি।

গুলি পুলিশের অভিযান ব্যাংকক সেনা সদস্য হামলাকারী সেনা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে তরুণের মৃত্যু
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:১০

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর