পুঁজিবাজারে আসছে ৪ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক: অর্থমন্ত্রী
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৭:৪৯
ঢাকা: পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অংশ হিসেবে চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক— বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল), অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংককে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আহ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, একটি জায়গা নিয়ে সবসময় আমরা চিন্তাগ্রস্ত— সেটা পুঁজবিাজার। আমরা যেকোনো মূল্যে পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে চাই। তাই আরও চারটি রাষ্ট্রীয় ব্যাংক পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা হচ্ছে। সোনালী ব্যাংকসহ শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন অন্য তিনটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের শেয়ার পুঁজবিাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সরকারি মালিকানাধীন চার ব্যাংকের শেয়ার একযোগে পুঁজিবাজারে ছাড়লে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) অর্থ মন্ত্রণালয়রে সভাকক্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসতে করণীয় নির্ধারণ করতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক শেষে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম, অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার, বাংলাদশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেন, আইসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ভালো মৌল ভিত্তির কোম্পানির শেয়ার অফলোডের কোনো বিকল্প নেই। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো শেয়ার ছাড়লে সাধারণ বিনিযোগকারীরা বাজারে ফিরে আসবে বলে আশা করা যায়। কারণ ব্যাংকগুলোর মালিক রাষ্ট্র, যেকোনো ধরনের নেতিবাচক পরস্থিতিতেও এসব ব্যাংকের গ্যারান্টার রাষ্ট্র নিজেই। ফলে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ছাড়া হলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে। এরই মধ্যে পুঁজিবাজারের সূচক বাড়াতে সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
মুস্তফা কামাল বলেন, সরকারি যেসব ব্যাংক রয়েছে, তার মধ্যে একটির শেয়ার বাড়ানোসহ পাঁচটি ব্যাংক আমরা পুঁজিবাজারে নিয়ে আসব। বাজারে এরই মধ্যে তালিকাভুক্ত রূপালী ব্যাংকের শেয়ারও বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল), অগ্রণী, জনতা ও সোনালী ব্যাংককে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা হবে।
ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। কমিটিতে থাকবেন পাঁচটি ব্যাংকের প্রতিনিধি। আর এর কার্যক্রম সমন্বয় করবে আইসিবি।
মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের মূল অর্থনীতির কোথাও খারাপ সংকেত নেই। একটিমাত্র খাত এখনো আমাদের নেতিবাচক, তবে তা দিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি বিবেচনা করা যাবে না। তাছাড়া সারাবিশ্বের অর্থনীতির বিবেচনায় আমাদের অর্থনীতির অবস্থা ভালো।
এক প্রশ্নের উত্তরে র্অথমন্ত্রী বলেন, আশা করা যায় আগামী অক্টোবরের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা যাবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর মধ্যেই এগুলো বাজারে আসবে। সোনালী ব্যাংককেও আমরা নিয়ে আসব পুঁজিবাজারে। তবে তাতে একটু সময় লাগবে। বাকিগুলো আমরা সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে তালকিাভুক্ত করে ফেলব।
পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকেও পুঁজিবাজারে নিয়ে আসার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি খাত থেকেও লাভজনক সাতটি প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে নতুনভাবে আনা হবে। বাকি দুইটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের পরিমাণ বাড়ানো হবে।