‘২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করতে খসড়া রোডম্যাপ তৈরি’
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৯:১০
সংসদ ভবন থেকে: স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষার স্বার্থে নকল-ভেজাল ওষুধ বিক্রির বিরুদ্ধে সরকার কঠোরতা অবলম্বন করছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আলোকে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে একটি খসড়া রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে।’
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী সংসদে এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘ঔষধের অনিয়ম প্রতিরোধের লক্ষ্যে বিদ্যমান ঔষধ আইনকে আরও যুগোপযোগি ও কঠোর শাস্তির বিধান রেখে প্রস্তাবিত আইন অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
দেশের উন্নয়নের চলমান প্রক্রিয়াকে গতিশীল রাখতে মানুষকে সুস্থ্য ও নেশামুক্ত রাখতে হবে। তামাক থেকে দূরে সরিয়ে আনতে হবে। এজন্য সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রয়োজন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘নকল-ভেজাল ঔষধ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ও অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছে। নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রির দায়ে ৩৯ জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ৪৪টি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়েছে। প্রায় ৩২ কোটি টাকা মূল্যের নকল-ভেজাল ওষুধ জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে।
সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার মমতা হেনা লাভলীর প্রশ্নের লিখিত জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, তামাক সেবন ও ধূমপানের কারণে ফুসফুস ক্যানসার ও ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদী রোগ হয়ে থাকে।
তিনি জানান, টোবাকো অ্যাটলাস-২০১৮ অনুযায়ী, তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর এক লাখ ৬১ হাজারের অধিক লোক মৃত্যুবরণ করে। তামাক হচ্ছে এমন একটি ক্ষতিকর পণ্য, যা উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সেবন- প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতির ক্ষতি করে। ধুমপান ও ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন- দুটোই ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী নেশা। পরোক্ষ ধুমপানও অধুমপায়ীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তামাক মানুষকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে। তামাক ব্যবহারজনিত রোগ ও মৃত্যু বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অর্থনীতিতেও তামাকের প্রভাব অত্যন্ত নেতিবাচক।
জাহিদ মালেক আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আলোকে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে একটি খসড়া রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে। সরকার কর্তৃক তামাক নিয়ন্ত্রণে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতির খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে একটি কৌশলপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে।