জুয়া ও ক্যাসিনো অপরাধের সাজা বাড়ানো উচিত: হাইকোর্ট
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৪:২৬
ঢাকা: সম্প্রতি সরকারের নেওয়া ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়ে হাইকোর্ট বলেছেন, জুয়া ও ক্যাসিনো খেলার অপরাধে সাজা বাড়ানো উচিত। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি ) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ ঢাকার বিনিময়ে জুয়া ও ক্যাসিনো নিষিদ্ধ করে দেওয়া রায়ে এ মন্তব্য করেন।
আদালত তার পর্যক্ষণে বলেন, ‘১৮৬৭ সালের জুয়া আইনে ঢাকা মহানগরীর বাইরে জুয়া খেলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু এই আইনে সাজার পরিমাণ খুবই নগণ্য। মাত্র ২০০ টাকা জরিমানা এবং তিন মাসের কারাদণ্ড। এরপর ঢাকা মহানগরীর ভিতরে জুয়া খেললে এই আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিধান নেই।’
আদালত বলেন, ‘আমরা মনে করি সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জুয়া আইন বৈষম্যমূলক। কারণ সংবিধানেই বলা হয়েছে আইনের দৃষ্টিতে সকলেই সমান। অপরাধ, অপরাধই। এখানে ধনী ও গরিবের বৈষম্যের কোন সুযোগ নেই।’
এমন পর্যবেক্ষণ দিয়ে আদালত ঢাকার অভিজাত ১৩ ক্লাবসহ সারাদেশের সব ক্লাবে টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলা বন্ধ ঘোষণা করে রায় দেন। একইসঙ্গে দেশের কোথাও জুয়া ও ক্যাসিনো খেলার কোন উপকরণ পাওয়া গেলে তা তাৎক্ষণিক জব্দের নির্দেশ দেন আদালত।
ঢাকার অভিজাত ১৩ ক্লাব হলো- ঢাকা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, বনানী ক্লাব, অফিসার্স ক্লাব ঢাকা, ঢাকা লেডিস ক্লাব, ক্যাডেট কলেজ ক্লাব গুলশান, চিটাগাং ক্লাব, চিটাগাং সিনিয়র্স ক্লাব, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব ও খুলনা ক্লাব।
ঢাকা ক্লাবসহ দেশের ১৩টি অভিজাত ক্লাবে টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলা বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সামিউল হক ও অ্যাডভোকেট রোকন উদ্দিন মো. ফারুক। ওই রিটের প্রেক্ষিতে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।
রিটের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমেদ রানজীব।
আবেদনে ঢাকা মেট্রোপলিন পুলিশ অধ্যাদেশ ১৯৭৬, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশ ১৯৭৮ এবং পাবলিক গেম্বলিং অ্যাক্ট ১৮৬৭ অনুযায়ী কোনো প্রকার জুয়া খেলা দণ্ডনীয় অপরাধ। একইসঙ্গে সংবিধানের ১৮ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকারকে পতিতাবৃত্তি ও জুয়া খেলা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে।