সংসদ ভবন থেকে: মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) এবং ই-পাসপোর্ট আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ভ্রমণ দলিল। বাংলাদেশ বিশ্বে ১১৯তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম দেশ হিসেবে ঝুঁকিমুক্ত নিরাপদ ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন করেছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সব এমআরপিকে ই-পাসপোর্টে রূপান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদের ৬ষ্ঠ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বেগম শামসুন নাহারের প্রশ্নের লিখিত জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়।
আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) এবং ই-পাসপোর্ট যুগপৎভাবে চলমান থাকবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঢাকার তিনটি অফিস; ঢাকাস্থ বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, উত্তরার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এবং যাত্রাবাড়ীর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্ট চালু করা হয়েছে। ১৮ মাসের মধ্যে ক্রমান্বয়ে সব বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস এবং আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসগুলোতে ই-পাসপোর্ট চালু করা হবে।
সরকারি দলের দিদারুল আলমের প্রশ্নের লিখিত জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বর্তমানে সারাদেশের কারাগারে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি বন্দি রয়েছে। দেশের কারাগারগুলোর বন্দি ধারণক্ষমতা ৪০ হাজার ৯৪৪ জন। কিন্তু বর্তমানে কারাবন্দি রয়েছে সংখ্যা ৮৮ হাজার ৮৪ জন। কারাগারের ধারণক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সরকার নব-নির্মিত ৫টি কারাগারকে ‘কারাগার-১’ এবং পুরাতন কারাগারকে ‘কারাগার-২’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়াও নতুন কারাগার নির্মাণ ও পুরাতন কারাগার সম্প্রসারণ ও নতুন ভবন তৈরি করেও বন্দি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য মোছা. শামীমা আক্তার খানমের প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গিবাদের ধরণ ও কৌশল প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। জঙ্গিগোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে মাথাচাড়া দিয়ে নাশকতা ঘটানোর চেষ্টা করলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সময়োপযোগী কার্যকরী পদক্ষেপের মাধ্যমে বড় ধরণের নাশকতা ছাড়াই তা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে।’
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের লিখিত জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভয়ঙ্কর ইয়াবার থাবা সর্বাত্মক প্রতিরোধে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারের ইয়াবা পাচারকারীরা বাংলাদেশকে একটি রুট হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। আগামী ১৩ মার্চ মিয়ানমারের কাছে চতুর্থ বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ওই বৈঠকে ভয়ঙ্কর ইয়াবার থাবা থেকে রক্ষা পেতে ফলপ্রসূ আলোচনা করা হবে বলে আশা করছি।’
সরকার দলীয় অপর সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরনের প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী জানান, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি এই তিন পার্বত্য জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নকল্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া কেউ যাতে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি করে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে সে লক্ষ্যেও তাদের নিরলস পরিশ্রম অব্যাহত রয়েছে।