Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হামলায় আহত মেয়র-কাউন্সিলর, সমঝোতার প্রস্তাব পুলিশের


১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:২৫

কুড়িগ্রাম: পৌরসভার চাউল বাজারের সংস্কার কাজে বাধা দেওয়াসহ মেয়র আব্দুল জলিলসহ কয়েকজন কাউন্সিলরের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় আহত মেয়র থানায় মামলা করলেও পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের অভিযোগ, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সমঝোতার প্রস্তাব দিচ্ছে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।

জানা যায়, স্থানীয় ব্যবসায়ী হযরত আলীর নেতৃত্বে একদল ভাড়াটে সন্ত্রাসী লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাজারের উন্নয়ন কাজে বাধা দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন পৌর মেয়র আব্দুল জলিল। ঘটনার পাঁচদিন পার হলেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় পৌর পরিষদ ও পৌর কর্মচারী সংসদ বিক্ষুব্ধ। তারা ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রোস্তম আলী তোতা বলেন, ‘আগামী রোববারের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশ ব্যর্থ হলে সোমবার থেকে শুরু হবে কর্মবিরতি। এসময় পানি, বিদ্যুৎ, কঞ্জারভেন্সিসহ সব নাগরিক সেবা বন্ধ রাখা হবে।’

কুড়িগ্রাম পৌর মেয়র আব্দুল জলিল জানান, পৌরসভার মালিকানাধিন সাড়ে ৫০ শতক জমির এক পাশে অবস্থিত পৌর চাউল বাজার। এখানে রয়েছে ১৮টি দোকান ঘর ও ৩৪টি খোলা দোকান। জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এ মার্কেটটি সংস্কারের জন্য ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ করে দরপত্রের মাধ্যমে কার্যাদেশ দেওয়া হয় ঠিকাদারকে। গত সোমবার ঠিকাদারকে কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে গেলে হযরত আলী একদল ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে এসে হামলা চালায়। সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে ওইদিনই হযরত আলী, রফিকুল ইসলাম, শেখ বিপুল, মিঠু মিয়া, আব্দুস সালামের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও অনেকের বিরুদ্ধে এজাহার দাখিল করা হয়। পুলিশ বুধবার এজাহারভুক্ত ৩ জনকে থানায় ডেকে নিলেও তাদের গ্রেফতার করেনি। এরপর থেকে আসামিরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এত ঘটনার পরও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহফুজার রহমান বারবার আমাকেই থানায় এসে আসামি পক্ষের সঙ্গে বসে আপোষ করার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন, যা একেবারেই অনৈতিক।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘একজন পৌর পিতা হিসাবে ঘটনার পরপরই সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মোবাইলে অবহিত করি। নিজে ব্যক্তিগতভাবে থানায় উপস্থিত হয়ে এজাহার দাখিল করি। এরপরও আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বাধ্য হয়ে পুলিশ সুপারকে এ ঘটনা জানিয়েছি। এছাড়া পৌর পরিষদ ও পৌর কর্মচারী সংসদ যৌথ সভার রেজুলেশনসহ একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।’

পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রোস্তম আলী তোতা এবং সাধারণ সম্পাদক ও ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনিছুর রহমান বলেন, ‘যেখানে মেয়র, কাউন্সিলরদের নিরাপত্তা নেই, সেখানে সাধারণ মানুষের কি অবস্থা বুঝতেই পারছেন। মামলা দেওয়ার পর এজাহারভুক্ত আসামিরা থানায় বসে রফাদফা করে প্রকাশ্যে ঘুরছে। ’

তবে অভিযুক্ত হযরত আলী সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে সব ঘটনা অপপ্রচার। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে মামলার আসামি করা হয়েছে। পুলিশ আমাদের গ্রেফতার বা আটক করেনি। গত বুধবার সন্ধ্যায় একজন এসআই আমাকে থানায় ডেকে নেন। আমিসহ কয়েকজন থানায় গিয়ে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহফুজার রহমানের সাথে কথা বলি। ওসি আমাদের বিষয়টি সমঝোতা করে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। ’

কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজার রহমান বলেন, ‘এখনও মামলাটি রেকর্ড করা হয়নি। তবে প্রাপ্ত অভিযোগ তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। আর বাদি-বিবাদী নিজেরাই বিষয়টি মীমাংসা করে নিলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’

কুড়িগ্রাম চাউল বাজার মেয়রে ওপর হামলা সমঝোতা হামলার ঘটনা

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর