পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে অর্থ ধার দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২৩:১৫
ঢাকা: পুঁজিবাজারে দীর্ঘ মেয়াদি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে বিশেষ তহবিল গঠনের সুবিধা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর এ ক্ষেত্রে প্রতিটি তফসিলি ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে দুইশ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারবে। তহবিলের ১০ শতাংশ মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে হবে। এই বিনিয়োগ পুঁজিবাজার এক্সপোজার সীমারও আওতামুক্ত থাকবে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, প্রতি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, একাধিক প্রক্রিয়ায় তহবিলের টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা যাবে। ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত যেকোনো তফসিলি ব্যাংক রেপোর মাধ্যমে এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে মাত্র ৫ শতাংশ সুদ পরিশোধ করতে হবে। এই তহবিলের অর্থ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান (মার্চেন্ট ব্যাংক ও ডিলার লাইসেন্সধারী ব্রোকারেজ হাউজ) এবং অন্যান্য মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজকে (ডিলার) কেবল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য এই তহবিল ব্যবহার করা যাবে। তহবিল থেকে সর্বোচ্চ সাত শতাংশে ঋণ দিতে পারবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
বিশেষ তহবিল গঠনে নিজস্ব উৎস থেকে বা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে রেপোর মাধ্যমে অর্থ ধার নিতে পারবে। ট্রেজারি বিল ও বন্ডের বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে রেপোর মাধ্যমে এ অর্থ ধার নেওয়া যাবে। প্রথমে বিশেষ তহবিল গঠন করে পরবর্তীতে ট্রেজারি বন্ড ও বিলের বিপরীতে রোপোর মাধ্যমেও অর্থ নেওয়া যাবে।
তবে এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত তারল্য হতে ট্রেজারি বন্ড বা বিলের বিপরীতে রেপোর মাধ্যমে এই তারল্য সুবিধা নেওয়া যাবে। রেপোর মেয়াদ হবে ৯০ দিন। ৯০ দিনের মধ্যে তা নবায়ন করা যাবে। এভাবে ২০২৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই তহবিল ব্যবহার করা যাবে।
গঠিত তহবিলের বিনিয়োগের উৎসের হার নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দেশনা মতে, মোট তহবিলের ১০ শতাংশ বিএসইসির নীতিমালার ‘স্পেশাল পার্পাস ফান্ডে’ বিনিয়োগ করতে হবে। এছাড়া ব্যাংকের নিজস্ব পোর্টফোলিওতে ৪০ শতাংশ, ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানির নিজস্ব নতুন পোর্টফলিও (শেয়ার, ডিবেঞ্চার, বন্ড, মিউচ্যুয়াল ফান্ড) গঠনের জন্য ঋণ হিসেবে ১০ শতাংশ, অন্য ব্যাংকের বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবসিডিয়ারি মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউজের নিজস্ব নতুন পোর্টফলিও (শেয়ার, ডিবেঞ্চার, বন্ড, মিউচ্যুয়াল ফান্ড) গঠনের জন্য ঋণ হিসেবে ৩০ শতাংশ, অন্যান্য মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউজের নিজস্ব নতুন পোর্টফোলিও (শেয়ার, ডিবেঞ্চার, বন্ড, মিউচ্যুয়াল ফান্ড) গঠনের জন্য ঋণ হিসেবে ১০ শতাংশ করে ব্যবহার করতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, নিয়মিত বাংলাদেশ ব্যাংকে তথ্য দিতে হবে। পৃথক হিসাব বিবরণী ও বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। প্রজ্ঞাপনে বিনিয়োগের বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা আছে।
এর আগে, তারল্য সংকটে থাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে সম্প্রতি ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের দাবি করেছিল ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে নীতি সহায়তাও চাওয়া হয়েছিল। এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের নীতি নির্ধারণী ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক এই নীতিমালা প্রণয়ন করে।