Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাঈদীর পক্ষে ওয়াজকারী আজাহারী কীভাবে দেশ ছাড়লো, প্রশ্ন মেননের


১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২৩:৪১

সংসদ ভবন থেকে: শরীয়ত বাউলকে আইসিটি আইনে গ্রেফতার করে জেলখানায় রাখা হলেও মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত সাঈদীর পক্ষে ওয়াজকারী মিজানুর রহমান আজাহারী কিভাবে দেশ ছেড়েছেন— তা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তুলেছেন ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংস অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় এই প্রশ্ন রাখেন তিনি। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।

অধিবেশনে সাবেক মন্ত্রী মেনন বলেন, আমাদের দেশে শরীয়ত ও মারফতের দ্বন্দ্ব অনেক পুরাতন। এখন সৌদি-পাকিস্তানি ও জামায়াতিদের ওহাবিবাদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত করতে এ ধরনের দ্বন্দ্বের সম্পর্কে যখন রাষ্ট্রীয় আইন ব্যবহার করা হয়, তখন তা উদ্বেগের বিষয়।

মেনন বলেন, রাষ্ট্র কি অতীতের মতো আবার মৌলবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে? না হলে আজাহারী দেশ ছেড়ে যেতে পারে না। খতমে নবুয়ত নতুন করে হুংকার ছাড়তে পারে না। হেফাজত সমর্থন প্রত্যাহারের হুমকি দিতে পারে না। এরাই কয়েকদিন পর পাকিস্তানি কায়দায় ব্লাসফেমি আইন প্রণয়ন করতে বলবে, যেমন এই সংসদেই মানবতাবিরোধী অপরাধী নিজামী সেই প্রস্তাব তুলেছিল।

বঙ্গবন্ধু এ দেশকে ধর্মনিরপেক্ষতার মূল নীতি উপহার দিয়েছিলেন উল্লেখ করে রাশেদ খান মেনন বলেন, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি, ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু কেবল সোচ্চার ছিলেন না কেবল, বাস্তবে তার অনুসরণ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন কারও ধর্মানুভূতিতে আঘাত দিলে আইন তার ব্যবস্থা নেবে। আমি এই সংসদে স্পিকারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে ইউটিউবে প্রচারিত ধর্মীয় উম্মাদনা সৃষ্টি ও বিভাজনের কিছু বক্তব্যের পেনড্রাইভ দিয়েছিলাম। সে সবের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানা নেই।

বাম নেতা মেনন বলেন, অতীতে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের নামে যে ধর্মীয় আবরণ দিয়ে দেশকে পাকিস্তানি আদলে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে তার ছেদ ঘটানো হয়েছে। কিন্তু সেই প্রচেষ্টার অবসান হয়নি। রাষ্ট্রীয় প্রচারে, আমাদের আচার আচরণে, বেশ-ভূষার পরিবর্তনে তার রেশ আমরা দেখি। ফেসবুক, ইউটিউবের নিত্য প্রচারে সেই মনমানসিকতাকে উসকে দেওয়া হচ্ছে। ভাষা আন্দোলন যেমন আমাদের জাতিসত্তাকে নির্দিষ্ট করেছে, তেমনি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধুও নির্দিষ্ট করে বলেছিলেন, ‘ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় আমি বলব আমি বাঙালি, বাঙলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা’।

বাংলাদেশ ঋণখেলাপিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে উল্লেখ করে রাশেদ খান মেনন বলেন, গত ১০ বছরে দেশ থেকে পাচার হয়েছে ৫ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা দিয়ে অর্থমন্ত্রীর আগামী বছরের বাজেট হতো। নিউইয়র্কেও গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির গবেষণা মতে, ২০১৪ সালে একবছরেই এই অর্থ পাচারের পরিমাণ ৯ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ৭২ হাজার কোটির সমপরিমাণ অর্থ। এই অর্থ পাচারকারীরা কানাডা, মালয়েশিয়া, ব্যাংককে বেগমপাড়া বানিয়েছে। কানাডা প্রবাসীরা এদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে। তালিকা প্রকাশ করতে বলেছে। আমিও বলি সংসদে ঋণ খেলাপিদের মতো এই অর্থ পাচারকারী বেগমপাড়ার মালিকদের নাম প্রকাশ করা হোক। তিনি ব্যাংক লুটেরাদের অর্থ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।

মিজানুর রহমান আজাহারী রাশেদ খান মেনন সাঈদী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর