রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: নারী হিসেবে এই সমাজের একজন পুরষকেও বিশ্বাস করতে পারছি না। এমনকি নিজের কাছের বন্ধু কিংবা স্বামীকেও না। বাসাবাড়ি, যানবাহন, কর্মস্থলসহ দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গাতে নিজেদের নিরাপদ মনে হয় না।- এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যলয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ মানববন্ধন অংশ নেন প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। বন্ধুর দ্বারা ব্লাকমেইলের শিকার হয়ে এক শিক্ষার্থীর ধর্ষিত হওয়ার ঘটনায় ধর্ষকের শাস্তি ও যৌন হয়রানি বন্ধের দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম? যে দেশের স্বাধীনতার জন্য ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম দিতে হয়েছে; সেই স্বাধীন দেশে পঞ্চাশ বছর পরও নিত্যদিন নারীদের যৌন হয়রানি আর ধর্ষণের মতো ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। দেশ যেন আজ ধর্ষণের এক চারণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এমন ঘৃণ্য অপরাধ করেও ধর্ষকরা নির্ধিদ্বায় পার পেয়ে যাচ্ছে।
এ সময় মানববন্ধন থেকে শিক্ষার্থীরা ৬টি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- ধর্ষকের আজীবন বহিষ্কার। যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের কার্যকারিতা বাড়ানো, আইনের ফাঁক গলিয়ে অপরাধী যাতে বের না হতে পারে সেজন্য প্রশাসনকে পদক্ষেপ নেওয়া, নারীবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরি, বহিরাগতদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং মোটরসাইকেলের গতি নিয়ন্ত্রণ।
গত ২৪ জানুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজুর সারদ (২২) তার বান্ধবীকে (রাবি ছাত্রী) কাজলা সাঁকপাড়া এলাকার মেসে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পরে ওই ছাত্রীর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এরপর গত ২৭ জানুয়ারি দুপুরে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী মামলা দায়ের করে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সেলিম রেজা আসামিকে দুদিনের রিমান্ডে পাঠান।
