ঢাকা: দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বাস বিল্ডার্সের এমডি নজরুল ইসলাম দুলালকে টানা ৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টানা দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নজরুল বলেন, আমার কাছে যা জানতে চাওয়া হয়েছে আমি সব তাদেরকে বলেছি। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করেছেন কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না না। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনেনি।’
এত অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদের মালিক কিভাবে হলেন— জানতে চাওয়া হলে নজরুল ইসলাম খানিকটা ধমকের সুরে সাংবাদিকদের বলেন, অল্প সময় বলতে কী বোঝান? এ সময় তিনি একজন সাংবাদিককে লক্ষ্য করে বলেন, আপনার বয়সের চেয়ে বেশি সময় ধরে আমি ব্যবসা করি। এরপর প্রায় দৌড়ে গাড়িতে ওঠেন তিনি।
এদিকে, দুদক সূত্রে জানা গেছে, নজরুল ইসলাম যেসব সম্পদের মালিক হয়েছেন, সেগুলো অর্জনের বিষয়ে কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। এমনকি দুদক কর্মকর্তাদের প্রশ্নবাণে নজরুল বারবার খেই হারিয়ে ফেলছিলেন।
দুদক সূত্রে আরও জানা গেছে, নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ব্যবসা, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগগুলোর তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করতে দুদকের ক্যাসিনোবিরোধী টিমের সদস্যরা এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে এর আগেও ভবন নির্মাণে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ ছিল। ওই অভিযোগেরও অনুসন্ধান চলছে।
এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি নজরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা ছিল। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে তিনি জিজ্ঞাসাবাদের সময় পেছানোর আবেদন করলে তাকে ১২ ফেব্রুয়ারি তারিখ দুদকে আসতে বলা হয়। সে অনুযায়ী তিনি দুদকে উপস্থিত হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এদিকে, দুদক থেকে পাঠানো নজরুল ইসলামের চিঠিতে বলা হয়, ঠিকাদার জি কে শামীমসহ অন্যান্য ব্যক্তির যোগসাজশে অবৈধ প্রক্রিয়ায় ও ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে বড় বড় ঠিকাদারি কাজ নিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন অনিয়ম ঘটিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, ক্যাসিনো ব্যবসাসহ অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা অর্জন করে বিদেশে পাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগটির সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার বক্তব্য শোনা ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।