একটি সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করি, আরেকটির উৎপত্তি হয়: প্রধানমন্ত্রী
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২১:২১
ঢাকা: মাদক প্রতিরোধে বাধাগুলোর প্রসঙ্গ তুলে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি সমস্যা যখন নিয়ন্ত্রণ করি তখন আরেকটির উৎপত্তি ঘটে। সেটিকে আবার নিয়ন্ত্রণ করতে আরেকটির উৎপত্তি ঘটে। তবে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান নেওয়ার ফলে আগে যেমন খুব ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল, সেটি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তরপর্বে সরকারদলীয় সদস্য দিদারুল আলমের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাদক সামাজিক ব্যাধি হিসেবে দেখা দিয়েছে। মাদক যারা সেবন করে অথবা যারা বিক্রি করে বা ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত, সকলেরর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
জঙ্গিবাদ দমনের সঙ্গে সঙ্গে সরকার মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রেখেছে উল্লেখ করেন সংসদ নেতা বলেন, ‘এ জঙ্গিবাদ দমনের সঙ্গে সঙ্গেও আমরা সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-মাদক; এই তিনটিকেই সমানভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি এবং যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
সেই সঙ্গে আমাদের আইনশৃঙ্খলা সংস্থাকে যথাযথ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কাজেই এটি প্রতিরোধের ব্যবস্থা যেমন নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
পাশাপাশি জঙ্গিবাদ নির্মূলে যে ধরনের সচেতনতামূলক কাজ সরকার করে যাচ্ছে এ ধরনের সচেতনতামূলক কাজ মাদকের বিরুদ্ধেও করা হচ্ছে বলেও জানান সংসদ নেতা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আরেকটি দিক হচ্ছে, আমাদের ছেলে-পেলেদের খুব বেশি খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা, সাংস্কৃতিক চর্চার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা এবং অন্যান্য কারিকুলামে তাদের যতবেশি সম্পৃক্ত করতে পারি, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি।’ পাশাপাশি বাবা-মা বা অভিভাবক, শিক্ষকদেরও নিজ নিজ সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখার আহ্বান জানান তিনি।
এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের সন্তানরা কার সঙ্গে মিশছে, কীভাবে মিশছে, কোথায় যাচ্ছে, সেগুলো অভিভাবকদের দেখা দরকার। কারণ অনেকটা দায়িত্ব তাদের ওপরও বর্তায়।’
‘তবে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান নেওয়ার ফলে আগে যেমন মাদক খুব ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছিল, সেটি অনেকটা নিয়ন্ত্রিত। তবে এখনও বাংলাদেশের কোনো কোনো পয়েন্ট থেকে এ মাদকগুলো আমাদের দেশে আসে, আমরা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করে যৌথভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেন এই মাদকগুলো না আসে।’
মাদক প্রতিরোধে আরেকটি একটি সমস্যার কথা তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি সমস্যা হচ্ছে, একটি যখন নিয়ন্ত্রণ করি তখন আরেকটার উৎপত্তি ঘটে। সেটিকে আবার নিয়ন্ত্রত করতে করতে আরেকটির উৎপত্তি ঘটে। সেই কারণেই আমরা এ ব্যাপারে যথাযথ সচেতন এবং আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এ জন্য সকল সংসদ সদস্য, সচেতন নাগরিকদের নিজেরাই একটু সচেতন হয়ে তাদের আশপাশের সবাইকে মাদক থেকে দূরে রাখার জন্য কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
মাদকের সেবনের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর জন্য শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, পরিবারের ক্ষতি হয়। নইলে এ মাদক সেবন করতে গিয়ে নিজের মাকে হত্যা করা, বাপকে হত্যা করা, ভাইকে হত্যা করা; এ ধরনের ঘটনাও ঘটে থাকে। কাজেই এই ব্যাপারে সমাজকে আরও সচেতন হতে হবে।’
সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় আমরা করছি। কিন্তু সেই সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ, শিক্ষক, অভিভাবক তাদেরও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে আমরা এর ওপরে যেহেতু অভিযান চালাচ্ছি তাতে অবশ্যই অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এটির অভিযান অব্যাহত থাকবে।