Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোরবানির চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণে ব্যবস্থা নিতে কমিটি গঠন


১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২২:৫৬

ঢাকা: কোরবানির ঈদে পশুর চামড়া যথাযথভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিল্প, বাণিজ্য, পরিবেশ ও বন, ধর্ম, তথ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, অর্থ বিভাগ, ট্যারিফ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং চামড়া শিল্পসংশ্লিষ্টদের অংশগ্রহণে গঠিত কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের একটি সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে চামড়া শিল্পের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্সের প্রথম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বক্তৃতা করেন।

বিজ্ঞাপন

সভায় চামড়া ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকরা আড়তদারদের কাছ থেকে যথাসময়ে কোরবানির চামড়া না কিনলে সেগুলো সরকারি উদ্যোগে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন গুদামে ন্যূনতম তিন মাস সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া চামড়া সংরক্ষণের জন্য কওমি মাদ্রাসাগুলোকে প্রস্তুত রাখার কথা বলা হয়। এ জন্য তাদের ভর্তুকি দেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে উপজেলা পর্যায়ে ন্যূনতম দুইজন ডিলারকে চামড়া সংরক্ষণ ও বিপণনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে। এ জন্য তাদেরকে প্রয়োজনে প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এ ছাড়া পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজন হলে সাময়িকভাবে কাঁচা চামড়া/ ওয়েট-ব্লু চামড়া রফতানির অনুমোদন দেওয়া হবে। এর জন্য সরকারের রফতানি নীতি সংশোধন করার দরকার হলে তাও করা হবে বলে জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

সভায় আরও জানানো হয়, গত ঈদুল আজহায় আড়তদারদের কাছ থেকে চামড়া ক্রয়ের জন্য ট্যানারি মালিকদের অনুকূলে ৬৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও ট্যানারিগুলো মোট ৪৩৮ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে। গতবারের অভিজ্ঞতার আলোকে আগামী ঈদুল আজহায় কোরবানির চামড়া কেনার জন্য ট্যানারি মালিকদের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থানের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত বার অর্থছাড়ের ক্ষেত্রে যেসব দীর্ঘসূত্রতা ও সমস্যা দেখা দিয়েছিল তা নিরসনে চেষ্টা করা হয়।

এ ছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণের জন্য পেশাদার ও মৌসুমি কোরবানির পশু প্রক্রিয়াজাতকারী, ফড়িয়া, মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে চলমান হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গতবছর ৯ হাজার জনকে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলে সভায় অবহিত করা হয়।

এছাড়া, চামড়া সংরক্ষণে জনসচেতনতা তৈরি কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসন, মসজিদের ঈমাম, মাঠ পর্যায়ে ইসলামী ফাউন্ডেশন, আলেম-ওলামাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং টিভিসি তৈরি, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও আপলোড করে এ বিষয়ে প্রচার ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সভায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, চীনে করোনাভাইরাস বিস্তারের ফলে দেশীয় চামড়া শিল্প যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য সরকার বিকল্প বাজার অনুসন্ধান করছে। ইউরোপের বাজারে দেশীয় চামড়াজাত পণ্য রফতানির লক্ষ্যে ট্যানারিগুলোকে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ্র (এলডব্লিউজি)-এর সার্টিফিকেশন অর্জন করতে হবে। এ জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে সিইটিপি স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। সার্টিফিকেশন অর্জনে অন্যান্য শর্ত পূরণে ট্যানারি মালিকদের আরও সক্রিয় হতে হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী বলেন, ‘কোরবানির চামড়ার সঙ্গে ধর্মীয় অনুভূতি জড়িত। দেশীয় চামড়া শিল্পের স্বার্থে ট্যানারিগুলোকে রক্ষা করতে হবে। সে সঙ্গে কোরবানির চামড়া যেন নষ্ট না হয় এবং তৃণমূলের চামড়া ব্যবসায়ীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়টিও দেখতে হবে। সবার স্বার্থরক্ষায় যা করণীয় সরকার সেটি করবে।’

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘ট্যানারিগুলো যেন ইউরোপের বাজার ধরতে পারে সে জন্য তাদের ঋণপ্রাপ্তিতে সহযোগিতাসহ অন্যান্য বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে সবধরনের সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে। সাভারে অবস্থিত চামড়া শিল্পনগরীর অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণসহ সকল কাজ দ্রুত সমাপ্ত করার জন্য প্রকল্প পরিচালককে নির্দেশনা দেন।’

ঈদুল আজহা কোরবানির চামড়া চামড়া

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর