উচ্চ আদালতের রায়ও বাংলায় হবে : প্রধানমন্ত্রী
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৭:৩০
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: সর্বস্তরে বাংলাভাষার প্রচলন বিষয়ের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে উচ্চ আদালতের রায়ও বাংলায় লেখা হবে। এটা আমরা আশা করতে পারি। তবে ইংরেজি ভাষায় রায় লেখার বিষয়টি বহুদিনের অভ্যাস। হুট করে তো সবকিছুর পরিবর্তন সম্ভব না। তবে ভবিষ্যতে বাংলায় রায় লেখা হবে।’
কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে মাতৃভাষা দিবসের এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
উচ্চ আদালতের রায় বাংলা ভাষায় হওয়ার গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রায় তো ইংরেজি তে লেখা হয়। সবাই তো ইংরেজি বোঝে না। দেখা গেল উকিল যা বললেন, সেটার ওপর ভরসা করেই রায়ের মর্মার্থ বুঝতে হয়।’
এ সময় হাস্যরস যোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেখা গেল উকিল এমন কিছু বলে দিল, যাতে মক্কেলদের পকেটের টাকা আরও খরচ হলো। এখানে অনেক উকিল আছে, আপনারা আবার কিছু মনে করেন না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘রায় বুঝতে গেলে পকেটের টাকা খরচ হচ্ছে। এটা হওয়া উচিৎ না। রায় বাংলায় হলে এটা বুঝতে সাধারণ মানুষের সুবিধা হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন নেই। উচ্চ আদালতের রায় বাংলায় হওয়ার জন্য আমাদের আর কত শত বছর অপেক্ষা করতে হবে ‘ এছাড়া সামাজিক অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র, বিয়ের কার্ড ইংরেজি ভাষায় লেখা হচ্ছে।’
রফিকুল ইসলামের বক্তব্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কয়দিন আগে আমাদের এক সচিব আমাকে একটা নিমন্ত্রণ কার্ড দিয়েছিলেন। সেই কার্ড দেখে আমি খুশি হয়েছি। আমারও প্রশ্ন ইংরেজি ভাষায় এ সব কার্ড কেন হয়? কোন হীনমন্যতায় বাংলায় লেখা হয় না। এর সঙ্গে আত্মমর্যাদার কোনো সম্পর্ক আছে কি না বুঝি না। আমার মনে হয় এটি ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়েছে এটা হওয়া ঠিক না।’
‘তবে আমরা ইংরেজি ভাষা বা বহু ভাষা শেখার বিরোধী না’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন পুরো বিশ্ব ডিজিটাল হচ্ছে, পুরো বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অন্য ভাষার দরকার আছে। তাই বলে যে ভাষার জন্য মানুষ রক্ত দিয়েছে, সেই ভাষার চর্চা করব না তা হতে পারে না। অন্য ভাষা না শিখলে আমরা উন্নত হতে পারব না এমন ধারণা রাখা ঠিক না।’
‘তবে আমাদের দ্বিতীয় ভাষা শেখার দরকার আছে। আমাদের তরুণ প্রজন্মের অনেকেই অনলাইনে উপার্জন করছে।’
রাজনৈতিক পট-পরিক্রমার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা বলা হয়। তার বহুদলীয় গণতন্ত্রের নমুনা হলো মার্শাল ল অর্ডিন্যান্স তুলে দিয়ে রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া।’
যুদ্ধাপরাধী-রাজাকারদের হাতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা তাদের বিচার করেছি, তাদের সম্পর্কে সচেতন করেছি। আপনারাও এই রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করবেন না। আজকের দিনে আমি এ আহ্বান জানান।
সারাবাংলা/একে
আরও পড়ুন : বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নেই এর থেকে লজ্জার কী আছে?