‘করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে’
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৫৮
ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেছেন, করোনা ভাইরাসের লক্ষণ হাঁচি, সর্দি-কাশি থেকে নিউমোনিয়া, সঙ্গে প্রবল জ্বর ও শ্বাস কষ্ট দেখা দেয়। তবে প্রাথমিকভাবে এর উপসর্গ বোঝা কঠিন। তাই সাবধানে থাকতে হবে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিএসএমএমইউর বহির্বিভাগের তৃতীয় তলায় অনুষ্ঠিত ‘নতুন করোনা ভাইরাস (COVID-19)’ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতেও সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। হাঁচি-কাশিতে আক্রান্ত রোগী কোথা থেকে এসেছেন, বিদেশে গিয়েছিলেন কিনা তা অবশ্যই জানতে হবে। এছাড়াও সবাইকে বাসায় ফিরে সঙ্গে সঙ্গেই সাবান দিয়ে হাত ও মুখ ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই ভাইরাস প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যেই অভূতপূর্ব উদ্যোগ নিয়েছে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিএসএমএমইউতে বিভিন্ন সেমিনার-আলোচনা সভা, জনসচেতনতা সৃষ্টি ও প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমসহ এই ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণে ধারাবাহিক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান উপাচার্য।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ’র উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার বলেন, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী সনাক্ত না হলেও আত্মতুষ্টি হওয়ার কারণ নাই। অবশ্যই এই বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। দেশে নতুন করোনায় আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি শনাক্ত না হলে কিংবা কারও শরীরে এই ভাইরাসের লক্ষণ না পেলেও সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসএমএমইউ’র বক্ষব্যাধি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর করোনা ভাইরাসের কথা প্রথম জানা যায়। এই পর্যন্ত করোনা ভাইরাস ২৮টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ৪৫ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং ১২ শত মানুষ মারা গেছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৪৫০০ মানুষ সুস্থ হয়েছেন।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় যেখানে সেখানে থুথু ফেলা বন্ধ করতে হবে। হাঁচি-সর্দি-কাশি হলে সার্বিক হাইজেনিকের বিষয়টি মাথায় রেখে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে চলতে হবে।
বিএসএমএমইউ’র কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, চীনে শুরু হওয়া করোনা ভাইরাসের বিষয়টি সারা বিশ্বে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এই ভাইরাসটি প্রতিরোধে আমাদেরকে আরও সচেতন হতে হবে।
আলোচনা সভায় জানানো হয়, কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। হাত দিয়ে নাক বা মুখ ঘষা থেকে বিরত থাকাসহ আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু ব্যবহার করার পর ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হবে। এছাড়া, অসুস্থ পশু-পাখির সংস্পর্শে না যাওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ’র রেজিস্টার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে মাহবুবুল হক, ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী, পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারিহা হাসিন প্রমুখসহ অন্যান্যরা।