করোনাভাইরাসের বেশি ঝুঁকির তালিকায় বাংলাদেশ নেই
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:০৪
ঢাকা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট’ করে করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) জন্য উচ্চ পর্যায়ের ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে যেসব দেশকে চিহ্নিত করেছে, বাংলাদেশ সেই তালিকাতে নেই বলে জানিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছেন, উচ্চ ঝুঁকির দেশের তালিকায় নাম না থাকায় করোনাভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশের খুব বেশি আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত আইইডিসিআরে করোনাভাইরাস নিয়ে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, যারা উহানে থাকেন বা অন্য কোনো স্থানে যারা করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে গেছেন, কোয়ারেনটাইন তাদের জন্য প্রযোজ্য। চীন থেকে ফিরে আসা সবাইকে কোয়ারেনটাইনে নিতে হবে— বিষয়টি এমনও নয়। তবে অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে তাদের হোম কোয়ারেনটাইনের কথা বলা হয়। অর্থাৎ জনসমাগম যতটা সম্ভব এড়াতে বলা হয়। কারণ যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ বা উপসর্গ না দেখা দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কিন্তু তার কাছ থেকে এই ভাইরাস ছড়াবে না।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সারাদেশে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, চীন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত ও সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে। তাই এসব দেশ থেকে আসা কারও মাধ্যমে যেন করোনার ঝুঁকি তৈরি না হয়, সেজন্য আমরা সতর্ক। বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং চলছে। এটা নিয়মিত কার্যক্রম। এই কার্যক্রম চলমান অর্থ এই নয় যে পরিস্থিতি আতঙ্কিত হওয়ার মতো।
ব্রিফিংয়ে আইইডিসিআর পরিচালক জানান, করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে রিএজেন্ট নেওয়া হয়েছে। এই রিএজেন্টের মাধ্যমে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ফল পাওয়া সম্ভব হবে।
সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশিদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় দেশটির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে জানান অধ্যাপক ফ্লোরা। তিনি জানান, দেশটিতে প্রথম যিনি ভর্তি হয়েছিলেন, তিনি এখনো সেখানে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) আছেন। বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল। সেখানে আরও ছয় জন বাংলাদেশি কোয়ারেনটাইনে আছেন।
এদিকে, আশকোনা হজ ক্যাম্পের কোয়ারেনটাইন ইউনিটে উহান ফেরত যেসব বাংলাদেশিকে রাখা হয়েছে, তাদের চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ফ্লোরা। এ সময় করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি জানান,কোয়ারান্টাইনে যারা আছেন তারা কোন রোগী নয়। তাদের পরিচয় প্রকাশ করে সামাজিক নিরাপত্তার হুমকিতে না ফেলার অনুরোধ জানান ডা.ফ্লোরা।
শুক্রবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন বিমানবন্দর, স্থলবন্দর ও সমুদ্রবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করা ১৩ হাজার ৫৪২ ব্যক্তির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর।
কভিড-১৯ করোনাভাইরাস বাংলাদেশে করোনাভাইরাস বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা