‘পুঁজিবাজারে আনতে বহুজাতিক কোম্পানিকে উৎসাহ দিতে হবে’
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৭:১২
ঢাকা: পুঁজিবাজারে শেয়ারের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য বহুজাতিক ও বেসরকারি খাতের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করতে হবে। সেজন্য প্রয়োজনে তাদের নীতি সহায়তা দিতে হবে। আর এক্ষেত্রে ভালো কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে কর ও ভ্যাট রেয়াতসহ বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিজয়নগরে হোটেল-৭১-এ বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) উদ্যোগে পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান এসব কথা বলেন। এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ মতিন, সহ-সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
বিএমবিএ সভাপতি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানি নিয়ে আসতে তাদের কর রেয়াতসহ প্রয়োজনে আরও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনতে পারলে বাজারে শেয়ারের সরবরাহ বাড়বে। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে।’
পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদশে ব্যাংকের ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনকে যুগান্তকারী নীতি সহায়তা অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পুঁজিবাজার পরিস্থিতি অনুকূল ছিল না। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের বিশ্লেষণ থেকে বোঝা যায়, বাজারে অর্থের যোগান কম ছিল। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বাজার মধ্যস্থতাকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার সুযোগের জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছিলাম। কোনো প্রকার দান বা ভর্তুকির প্রস্তাব করিনি।’
তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুঁজিবাজার উন্নয়নের উদ্যোগ নেন। ফলে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার উন্নতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দিকনির্দেশনা মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংক এক যুগান্তকারী নীতি সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। যা বিনিযোগকারীদের মধ্যে আগ্রহ ও সাহস যোগাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিশেষ তহবিল নিয়ে অপপ্রচারের যৌক্তিকতা নেই। লক্ষ্য করা যায় যে, এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বস্তুনিষ্ঠভাবে উপস্থাপন না করে কিছু ক্ষেত্রে ভুল ব্যাখ্যা বা উপস্থাপনা হচ্ছে। যা বিনিযোগকারী মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে পারে।’
পুঁজিবাজার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছয়টি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বলেনও সংবাদ সম্মেলনে জানান বিএমবিএ সভাপতি। এর মধ্যে রয়েছে- পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অংশ গ্রহণ বাড়ানো; মার্চেন্ট ব্যাংকার ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিযোগকারীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা করা; আইসিবির সক্ষমতা বাড়ানো; বাজারে আস্থা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাজারে মানসম্পন্ন আইপিও তালিকাভুক্তির লক্ষ্যে বহুজাতিক কোম্পানি ও সরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো তালিকভুক্তির উদ্যোগ নেওয়া।
ছায়েদুর বলেন, ‘আমরা আশা করি এ বিষয়গুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়িত হবে এবং পুঁজিবাজার আরও গতিশীল হবে। যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। ইতোমধ্যে কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান পুজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়ে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে, যা বাজারের গভীরতা বাড়াতে সাহায্য করবে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ব্যাংক থেকে সহজে অর্থের যোগান হয়ে যায় বলে পুঁজিবাজারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার কঠিন প্রয়োগে কিছু ব্যবসায়ীরা পুঁজিবাজারে প্রবেশ করতে চায় না। অথচ স্বল্প মেয়াদ আমানত নিয়ে ব্যাংকগুলো দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ সরবরাহ করছে, যা তারল্যে অসামাঞ্জস্যতা তৈরি করে।