‘অন্যের অধিকার বিষয়ে সচেতন না হলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশংকা থাকে’
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২২:২৭
ঢাকা: ‘হেইট স্পিচ’ বা ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ মোকাবিলা ও সংলাপ বিস্তারে জাতিসংঘের মানদণ্ড অনুসরণ বিষয়ক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘আর্টিকেল নাইনটিন’ ও দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় থিংক ট্যাংক বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের (বিলিয়া) যৌথ উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় গুলশানের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালা আয়োজনে সহযোগিতা করেছে ব্রিটিশ সরকারের ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিস।
‘প্রটেক্টিং ফ্রিডম অব রিলিজিয়ন অর বিলিফ ফর অল: ইমপ্লিমেন্টিং ইউএন স্ট্যান্ডার্ডস টু ট্যাকল হেইট স্পিচ অ্যান্ড প্রমোট ডায়ালগ’ শীর্ষক কর্মশালায় সূচনা বক্তব্য দেন আর্টিকেল নাইনটিন বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল। জাতিসংঘে আর্টিকেল নাইনটিনের অ্যাডভোকেসি টিমের প্রধান এন্ড্রু স্মিথ ও সুপ্রীম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বিলিয়ার নির্বাহী পরিষদের সদস্য তানিয়া আমির দিনব্যাপী এই কর্মশালার বিভিন্ন অধিবেশন পরিচালনা করেন।
কর্মশালায় সরকার, কূটনীতিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী ও মানবাধিকার কর্মীরা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় তানিয়া আমির বলেন, ‘মানবাধিকার মানে কেবল মানুষ হিসেবে নিজের অধিকারকেই বুঝায় না। নিজের অধিকার চর্চা করতে গিয়ে অন্যেও অধিকার যাতে ক্ষুন্ন না হয় সে ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে। অন্যের অধিকার সম্পর্কে সচেতন না হলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশংকা সবসময় থাকে।’
তিনি জানান, ‘সংখ্যাগুরু’ ও ‘সংখ্যালঘু’ শব্দগুলো রাজনৈতিক। এসব শব্দের সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী কোনো নাগরিকের প্রতি কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করতে পারবে না।’
ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘ইউকে-ইউএন যৌথ এডভোকেসি উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হেইট স্পিচ মোকাবেলা ও প্রশমনে ডায়ালগের আয়োজন করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অন্তর্ভূক্তিমূলক ও বহুত্ববাদী সমাজ বিনিমার্ণেও জন্য বিদ্বেষমূলক বক্তব্য চিহ্নিত করা ও সেগুলো প্রশমনে উদ্যোগ নেয়া জরুরি। এজন্য আর্টিকেল নাইনটিন ভবিষ্যতে আন্তঃধর্মীয় সংলাপেরও আয়োজন করবে।’
দিনব্যাপী কর্মশালায় তিনটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এসব অধিবেশনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও সনদ অনুযায়ী বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞাহসমূহ ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এসব সংজ্ঞার স্থানীয়করণ, হেইট ক্রাইম ও হেইট স্পিচের মধ্যে পার্থক্য, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রশমনে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ, বহুত্ববাদী মতপ্রকাশের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেইট স্পিচে প্রতিরোধে করণীয়, সরকার, সুশীল সমাজ ও ধর্মীয় সংগঠনের ভূমিকা ইত্যাদি বিষয়ে দলভিত্তিক আলোচনা ও পর্যালোচনা অনুষ্ঠিত হয়।