‘করোনায় বাণিজ্যে সাময়িক সমস্যা হতে পারে, বড় ঝামেলা হবে না’
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৬:৪৮
ঢাকা: করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্যে সাময়িক সমস্যা হতে পারে, তবে বড় কোনো ঝামেলা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। তার মন্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনও। তার মন্তব্য, করোনার প্রভাবে দুই দেশের বাণিজ্যে তেমন কোনো সমস্যা হবে না।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুই দেশের কূটনীতিকদের মধ্যে এক বৈঠক শেষে তারা এ কথা বলেন।
চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমদানি ও রফতানিতে করোনাভাইরাসের প্রভাবে তেমন বড় কোনো ঝামেলা তৈরি হবে না। তবে সাময়িক একটু সমস্যা হতে পারে। এরই মধ্যে নববর্ষের ছুটি শেষ হয়েছে, চীনারা কাজে ফিরতে শুরু করেছে। সহজেই সবকিছু সামলানো যাবে।
লি জিমিং আরও বলেন, এখনই বিকল্প বাজার খোঁজার সময় হয়নি। চীন এখনো আগের মতোই বাণিজ্য খাতে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করতে পারবে।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, চীন অনেক আস্থাশীল ও তড়িৎকর্মা রাষ্ট্র। তাদের অনেক মেকানিজম ও বিকল্প পদ্ধতি জানা আছে। যে কারণে তারা খুব শক্তভাবে করোনাভাইরাসকে মোকাবিলা করছে। ঠিক তেমনি তারা বাণিজ্যের দিকটিও গুছিয়ে নিতে পারবে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে দুই দেশের বাণিজ্যে তেমন কোনো সমস্যা হবে না।
এদিকে, করোনাভাইরাসের প্রভাবে আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাস যদি চীন থেকে পণ্য সরবরাহ বন্ধ থাকে, তাহলে রফতানি খাতে ১২শ থেকে ১৫শ কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি মো. আব্দুল কাদের খান বলেন, চীন থেকে মোট অ্যাকসেসরিজের ৪০ বা ৫০ শতাংশ আমদানি করা হয়। তবে আমাদের যে চাহিদা রয়েছে, এত অল্প সময়ে কাছাকাছি দেশ ভারতসহ অন্য কেউ এই সাপোর্ট দিতে পারবে না। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি যদি চীনের কারখানাগুলো খুলে যায়, তাহলে আমাদের চাহিদা পূরণে সময় লাগবে না।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিসিসিআই) সভাপতি গাজী গোলাম মর্তুজা জানান, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির প্রভাব বাণিজ্যে পড়বে না। কারণ চীন একটি বিশাল আয়তনের দেশ। মূলত হুবেই ও আশপাশের কয়েকটি প্রদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। কিন্তু পরিকল্পিত অর্থনীতি গড়ে তোলার অংশ হিসেবে চীন একেকটি প্রদেশ বা অঞ্চলে একেক ধরনের পণ্য উৎপাদন কেন্দ্র বা হাব গড়ে তুলেছে। ফলে চীনে সব রকম পণ্য উৎপাদনে করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়ার কথা নয়। বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে— এমন প্রদেশগুলো সংক্রমণের বাইরে থাকায় চীন থেকে পণ্য আমদানিতে এখন পর্যন্ত বড় কোনো প্রভাব পড়ার কারণে নেই।
গাজী গোলাম মর্তুজা আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ-চায়না চেম্বারের পক্ষ থেকে চীনের সামগ্রিক পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রয়েছে। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজও (এফবিসিসিআই) এ বিষয়ে কাজ করছে। চীনের সঙ্গে যেসব খাতে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে, সেসব খাতের সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোও এ বিষয়ে ভূমিকা রাখছে।