Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদেশিরা কর ফাঁকি দিচ্ছে: দুদক চেয়ারম্যান


১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৭:৫৭

ঢাকা: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে বিদেশিরা চাকরি করছে। কিন্তু তারা সরকারকে ট্যাক্স দিচ্ছে না। তার কর ফাঁকি দিচ্ছে।

রোববার ( ১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিসিএস (কর) একাডেমি আয়োজিত দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তাদের ‘আয়কর আইন ও বিধানাবলী সংক্রান্ত বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্স’ ও ‘উপকর কমিশনারদের রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষণ কোর্স’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

ইকবাল মাহমুদ এনবিআরকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, বিদেশিরা বাংলাদেশে এসে ব্যবসা ও চাকরি করে কর ফাঁকি দিয়ে অর্থ পাচার করছে; তাদের ধরুন। ফাইলগুলো সিজ করুন। কারণ এগুলো জনগণের টাকা। এমন অনেক তথ্য আমাদের কাছে আছে যে, দুই হাজার ডলার বেতন। কিন্তু আর্নহ্যান্ড পাঁচ হাজার ডলার। কনসালট্যান্টদের অনেকে ইনকাম ট্যাক্স দেয়। কিন্তু এত এত কনসালট্যান্টদের সুবিধা অন্য কোথাও নেই। তাদের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া, অতিরিক্ত ইনকামের সুযোগ দেওয়া টাকা আত্মসাতের শামিল। চৌকিদার-তফাদার যদি দুই হাজার খানার ট্যাক্স আদায় করতে পারেন, তাহলে এনবিআর কেন পারবে না?’

রাজউক, এনবিআর, সিটি করপোরেশন মিলে কেন ঢাকার হোল্ডিংস ট্যাক্স আদায় করা সম্ভব হবে না- সে প্রশ্নও তোলেন দুদক চেয়ার‌ম্যান।

‘জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) থাকলে ট্যাক্স ফাইল থাকবে’ মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘আয় থাকুক আর নাই থাকুক এনআইডি থাকলে সবার ট্যাক্স ফাইল থাকবে। আমি ট্যাক্স বাড়ানোর পক্ষে না। বরং সরকারকে বলছি ট্যাক্স কমান। কারণ এই দেশের মালিক জনগণের হক যেন কেউ মেরে না যায়।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষ। কিন্তু ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করে ২০ লাখ মানুষ। এর থেকে লজ্জার আর কিছু নেই। এটা একটা জাতীয় লজ্জা। অথচ ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করার অর্থ হচ্ছে আপনি এদেশের মানুষ।’

বিজ্ঞাপন

ইকবাল মাহমুদ আরও বলেন, ‘টাকা মানুষ ঘরে রেখে দেয়। কখনও বাসায় সার্চিং হয় না। হয়তো ইদানিং হচ্ছে। যদি সন্দেহ হয় তাহলে সার্চ করেন। ২০ লাখ লোক ট্যাক্স রিটার্ন দেয় আর ১২ লাখ ট্যাক্স দেয়- এটা সত্যি লজ্জাজনক। দুদক-এনবিআরের মধ্যে আমরা লিংকআপ করতে পারছি না টেকনোলজি না থাকার কারণে। এনবিআর কেন অটোমেশনে যাচ্ছে না সেটা জানি না। অটোমেশন হচ্ছে হচ্ছে বলেও কেন হচ্ছে না। আমি জানি না, কর কর্মকর্তাদের কেনো গ্রেফতার করার ক্ষমতা নেই? বর্তমান আইন অবশ্যই পরিবর্তন হওয়া উচিত। কর কর্মকর্তাদের সিজ ও এরেস্ট করার ক্ষমতা থাকা উচিত।’

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষ নেওয়া প্রসঙ্গে ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ‘কেউ যদি ঘুষ খান তা ভিক্ষার শামিল। জোর করে কেউ টাকা পকেটে দিয়ে যায় না। ঘুষ না চাইলে তো কেউ দেবে না। চাইতে হলে হাত পাততে হয়। আর হাত পেতে ঘুষ নেওয়া ও ভিক্ষা একই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ভিক্ষা করব কি না?’

ভ্যালু অ্যাডেট ট্যাক্স কেন কাস্টমসকে দিতে হয় তা আজও আমার বোধগম্য নয় বলে মন্তব্য করেন দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘এটা তো ম্যানেজমেন্ট প্রবলেম। দুটো অথরিটির কাছে রেজিস্টার করতে হয়, এটা তো হ্যারেজমেন্ট। এটার প্রসেস সমন্বয় করার সময় এসেছে। আমাদের তদন্ত কর্মকর্তারা যখন কোথাও যায় ট্যাক্সের ব্যাপারে কথা বলার জন্য তখন শুনতে হয়, আমি তো ভ্যালু অ্যাডেট ট্যাক্স দেই। ভ্যাট আর ট্যাক্স মিলিয়ে হিসাব দেন। এটা তো হয় না, এটা আমাদের জন্য প্রবলেম।’

প্রোসেস যত জটিল হবে ফাঁকির সুযোগ তত বেশি থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য (কর ও প্রশাসন) আরিফা শাহনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন বিসিএস কর একাডেমির মহাপরিচালক লুৎফুল আজীম, দুদকের মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা) একেএম সোহেল, এনবিআর সদস্য (কর নীতি) আলমগীর হোসেন।

কর ফাঁকি দুদক চেয়ারম্যান বিদেশি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর